
যুগশঙ্খ, ওয়েবডেস্কঃ সুরলোকের মায়া ত্যাগ করে অমৃতলোকের পথে যাত্রা করলেন সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। তাঁক শেষ শ্রদ্ধা জানাতে কিংবদন্তী শিল্পীর অন্তিমযাত্রায় শামিল হলেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ। সুর সম্রাজ্ঞীর শেষ মুহূর্তের ছবি মোবাইলবন্দী করে রাখলেন তাঁরা।
রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা নাগাদ শিবাজি পার্কে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন হল সুর সম্রাজ্ঞীর শেষকৃত্যের। শামিল হলেন একাধিক পুরোহিত। শিবাজি পার্কে লতা মঙ্গেশকরকে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উপস্থিত থাকলেন একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি। সস্ত্রীক লতা মঙ্গেশকরের শেষযাত্রায় থাকলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে।
প্রোথিযশা শিল্পীকে অশ্রুজলে চিরবিদায় জানালেন, অভিনেতা, অভিনেত্রী ও রাজনীতিকরাও। প্রয়াত লতা মঙ্গেশকরকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত থাকলেন অমিতাভ বচ্চন, জাভেদ আখতাররা। ছিলেন সঞ্জয় লীলা বনশালী, নীল নীতিন মুকেশ, উর্মিলা মাতুন্ডকর। ছিলেন শাহরুখ খান। সস্ত্রীক লতাজিকে শ্রদ্ধা অর্পণ করেন শচিন তেণ্ডুলকর।
মুম্বইয়ের হাসপাতাল থেকে বাড়ি, তারপর সেখান থেকে শিবাজি পার্কে পর্যন্ত প্রায় ২০ জন ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিক সহ ২ হাজার ৭০০ জন পুলিশকর্মী ছিলেন লতাজির শেষকৃত্যের দায়িত্বে। সঙ্গীত কিংবদন্তীর প্রয়াণের খবর পেয়েই দিল্লি থেকে মুম্বইয়ে ছুটে আসেন প্রধানমন্ত্রী। সকালে পর পর টুইট করে লতাজিকে শ্রদ্ধা জানান নরেন্দ্র মোদী।
আজ সকাল ৮টা ১২ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর।
গত ৮ জানুয়ারি মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় লতা মঙ্গেশকরকে। পরিবারের তরফে জানানো হয় বয়সের কারণে তাঁকে হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তির সিদ্ধান্ত হয়। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, পরে জানানো হয়, কিংবদন্তী শিল্পীর অবস্থা স্থিতিশীল। আইসিইউতেই ১০-১২ দিন রাখা হবে লতাকে। সেই থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন এই সুর সম্রাজ্ঞী।
১৯৪২ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে গানের জগতে আসেন লতা। বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় ৩০,০০০ গান গেয়েছেন তিনি। তাঁকে কোকিলকণ্ঠী বলা হয়। একাধিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন লতা। ৯৮৯ সালে ভারত সরকার তাকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত করে। তার অবদানের জন্য ২০০১ সালে তাকে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা ভারতরত্নে ভূষিত করা হয়; এম. এস. সুব্বুলক্ষ্মীর পর এই পদক পাওয়া তিনিই দ্বিতীয় সঙ্গীতশিল্পী। ২০০৭ সালে ফ্রান্স সরকার তাকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা লেজিওঁ দনরের অফিসার খেতাবে ভূষিত করে।
তিনি ৩টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৫টি বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, ৪টি শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, ২টি বিশেষ ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন। ১৯৭৪ সালে তিনি প্রথম ভারতীয় হিসেবে রয়্যাল অ্যালবার্ট হলে সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে লতা সর্বজ্যেষ্ঠ। তার বাকি ভাইবোনেরা হলেন – আশা ভোঁসলে, ঊষা মঙ্গেশকর, মীনা মঙ্গেশকর ও হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর।