কুয়াশার কারণে একের পর এক দুর্ঘটনা পূর্ব বর্ধমানে, মৃত ১, জখম ৪০

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: কুয়াশার কারণে দৃশ্যমান কম থাকায় বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানে ঘটলো একের পর এক দুর্ঘটনা। এদিন সকালে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ সহ পৃথক তিনটি পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১ জনের ।৪০ জনের মত ব্যক্তি জখম হয়েছেন । গুরুতর জখম ৭ বাসযাত্রীকে ভর্তি করা হয়েছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ।দুর্ঘটনার কবলে পড়া গাড়ি গুলি আটক করে পুলিশ দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ।পুলিশের দাবি কুয়াশার করণেই ঘটেছে দুর্ঘটনাগুলি।
এদিন সাত সকালে জেলার বর্ধমান- কাটোয়া রাজ্য সড়কে ভাতারের বেলেন্ডা এলাকায় দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় । এই দুর্ঘটনায় দুটি বাসের চল্লিশজনের মতো যাত্রী জখম হন। দুটি বাসের সামনের অংশ একেবারে দুমরে মুচরে যায়। একটি বাসের চালক বাসেই আটকা পড়েন ।খবর পেয়ে ভাতার থানার পুলিশ দুর্ঘটনাস্থলে পৌছায় ।পরে পুলিশ ও দমকল বাসের জখম যাত্রীদের উদ্ধার করে বর্ধমান হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে , দুর্ঘটনাগ্রস্ত দুটি বাসের একটি ভাতারের মালডাঙা হয়ে বর্ধমানের দিকে যাচ্ছিল। উল্টো দিক থেকে আসা অপর বাসটি ভাতারের বলগোনা-নতুনহাট হয়ে বহরমপুর যাচ্ছিল । ঘন কুয়াশার কারণে দৃশ্যমান কম থাকায় দু’টি বাসের চালকের কেউই সামনের দৃশ্য ভালো ভাবে দেখতে পান নি । তার ফলে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় । ওই সময়েই আবার বর্ধমানমুখী একটি ছোট ফাঁকা পণ্যবাহী গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়া একটি বাসের পিছনে সজোরে ধাক্কা মেরে বসে ।
ওই গাড়িটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয় । স্থানীয় মানুষজন প্রথম উদ্ধারকাজে হাত লাগায় । পরে পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে বাসে আটকে পড়া এক চালক সহ জখমদের সকলকে উদ্ধার করে । বর্ধমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাসযাত্রী উত্তম পাল,হাফিজুল শেখ প্রমুখরা বলেন ,“ঘন কুয়াশা থাকায় বাসযাত্রীরা সকলেই জানালার কাচ তুলে বসে ছিলেন । হঠাৎ বিকট আওয়াজ হয়। তাকিয়ে দেখি বাস চালক মাথাগুঁজে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বাসের অনেক যাত্রী জখম হয়ে বাসেই আর্তনাদ করছিলেন । পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের সবাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় । “
অন্যদিকে এদিন সকালে জেলার মালডাঙ্গা মেমারি রোডে মন্তেশ্বরের পিপলন এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় এক মোটর বাইক আরোহীর মৃত্যু হয় । মৃতের নাম তারিকুল মোল্লা (৪৮)। তাঁর বাড়ি গুমো হাবড়া এলাকায়।পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ঘন কুয়াশার কারণে দেখতে না পেয়ে বড় কোনো গাড়ি বাইক আরোহীকে ধাক্কা মেরে চলে যায় । তাতেই তার মৃত্যু হয়েছে । মন্তেশ্বর থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে এই মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে । একই দিনে বর্ধমান বোলপুর ২বি জাতীয় সড়কে আউসগ্রামের বড়া চৌমাথার কাছে দুটি লরির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।একটি লরি বর্ধমান থেকে গুসকরা দিকে যাচ্ছিল । বিপরীত দিক থেকে আসা লরিটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গুসকরামুখী লরিটিকে মুখোমুখি ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। গুসকরা গামী লরিটির সামনের অংশ ভেঙে যায় । লরি চালক সামান্য চোট পান । পুলিশ ও স্থানীয়দের দাবি, কুয়াশার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে ।