নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কোভিড ১৯ বা করোনা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা, সমস্ত রকম নিয়ম মেনে আগামী ১১ জুন থেকে পরীক্ষামূলকভাবে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে কলকাতা হাইকোর্টে। শুক্রবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে হাইকোর্ট প্রশাসনের তরফে।
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করণ নায়ার রাধাকৃষ্ণাণের নির্দেশে জারি করা এই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করা হয়েছে, আপাতত হাইকোর্টের মূল বিল্ডিংয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে কাজ শুরু করা হবে। সোম, বুধ ও শুক্রবার, সপ্তাহে তিনদিন কাজ হবে আদালতে। এই কাজ শুরুর পর যদি দেখা যায় যদি কোন সমস্যা নেই তাহলে স্বাভাবিকভাবে এই নিয়মেই চলবে বিচার প্রক্রিয়ার কাজ। তবে যদি কোন রকম অসুবিধা তৈরি হয় তাহলে আদালতের স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে হাইকোর্ট প্রশাসনের তরফে।
এদিন কাজ শুরু করার বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, হাইকোর্টের মূল ভবনের তিনটি গেট খোলা রেখে চলবে কাজ। বি – গেট দিয়ে আইনজীবী, ল-ক্লার্ক এবং আদালতের কর্মীরা যাতায়াত করবেন, সি – গেট দিয়ে শুধুমাত্র আইনজীবীরা যাতায়াত করতে পারবেন এবং ই – গেট দিয়ে মামলাকারী ও মামলায় যুক্ত অন্যান্য ব্যক্তিরা যাতায়াত করতে পারবে। তবে বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন কোর্ট রুমের মধ্যে থাকতে পারবেন মাত্র ৮ জন। তার বেশি প্রবেশ করতে পারবেন না। এছাড়াও কোর্ট রুমের মধ্যে চারজন করে কর্মী থাকবেন। এবং নিয়ম মেনে মাস্ক ও জীবাণু নাশক আবশ্যক। প্রতিটি গেটে শরীরের তাপমাত্রা মাপার জন্য থাকবে থার্মাল গান। এছাড়াও ১১ তারিখের আগে গোটা আদালত চত্বর জীবাণুমুক্ত করার কথাও জানানো হয়।
অন্যদিকে হাইকোর্ট সূত্রের খবর, ১৫ তারিখ থেকে সিটি সিভিল কোর্ট, ব্যাঙ্কশাল কোর্ট, পকসো আদালত, এনডিপিএস আদালত-সহ কয়েকটি নিম্ন আদালত খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে আলিপুর আদালতে এখনও আলোচনা হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
গত বুধবার জেলা বিচারকদের সঙ্গে আদালত খোলা নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্সে আলোচনা করেন হাইকোর্টের প্রবীণ আইনজীবী বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ১৫ তারিখ থেকে যাতে কিছু নিম্ন আদালত চালু করা যায়, তিনি তেমনই নির্দেশ দেন বলে জানা গিয়েছে।
কিন্তু বন্ধ সবচেয়ে বড় গণপরিবহন লোকাল ট্রেন পরিষেবা। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে আদালতের কাজে উপস্থিত থাকবেন আদালতের কর্মীরা ? কারণ অধিকাংশ আদালতকর্মীই আদালতে পৌঁছন বিভিন্ন জেলা থেকে। যার মূল পরিবহন ব্যবস্থা ট্রেন। তবে এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবারই রাজ্যের দক্ষিণবঙ্গ পরিবহন সংস্থার তরফে হাইকোর্ট প্রশাসনকে জানানো হয়েছে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাইকোর্টে আশা কর্মীদের নিয়ে আসা ও নিয়ে যাওয়ার জন্য ১৫ টি বাস বরাদ্দ করা হয়েছে। এটা কি সমস্যার সমাধান মিলবে ? এই প্রশ্ন থেকেই যায়। এই অবস্থায় গোটা সপ্তাহ জুড়েই আদালতের কাজ নিয়ে থাকছে ধোঁয়াশা।