২১শে বিধানসভা নির্বাচন, নদিয়ায় শুরু রংবদলের এপিসোড

অভিষেক আচার্য, কল্যাণী: শুরু হল নতুন এপিসোড “দলবদল”। কোনো টেলিভিশনের পর্দায় নয়, বিভিন্ন জেলাজুড়ে আনাচে কানাচে পুরোনো মোড়কে নতুনভাবে দেখা মিলছে এই এপিসোডের। নদীয়ার বিভিন্ন জায়গায় দলবদলের হিড়িক এখন নিত্যদিনের জলভাত।
টেলিপর্দার সিরিয়ালগুলির মতোই আপাতত লম্বা এপিসোড চলবে কোভিড-১৯ এর। ইতিমধ্যে আমফান তার এপিসোড শেষ করলেও আমজনতার মনে ঘূর্ণিঝড়ের অভিনয় দাগ কেটে দিয়েছে। এবার নজর রং বদলের দিকে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে
কেন এই এপিসোড? সহজ উত্তর। ২১- শের বিধানসভা নির্বাচনের দামামা যে বেজে গিয়েছে।
সুপার সাইক্লোন হোক কিংবা ভাইরাস। দুই ভিলেনের গুন্ডাগিরির মোকাবিলা করতে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে ঘাসফুলের। এর পাশাপাশি গোদের ওপর বিষফোঁড়া ক্ষতিপূরণের টাকা লুঠ, দলের বিধায়ক,সাংসদদের অসন্তোষ তো রয়েছেই। এবার সংযোজন কর্মী-সমর্থকদের রং বদলের মাথাব্যথা। এরকম ছিন্নভিন্ন পরিস্থিতি সামাল দিতে অথৈ জলে হাবুডুবু খাচ্ছে শাসক দল। অন্যদিকে, এর ফায়দা লুটেপুটে নিচ্ছে গেরুয়া শিবির। ভাইরাসের কারণে প্রকাশ্যে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের বদলে বেছে নিয়েছেন মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর পথ। ভোটব্যাংক বাড়াতে পদ্ম শিবির শুরু করেছে জনসংযোগ কর্মসূচির।
যদিও খুব পিছিয়ে নেই মা,মাটি,মানুষের সরকার ও। বিধ্বস্ত অবস্থাতে তাঁরাও রং বদল করিয়ে পদ্মফুলে গোলাপের কাঁটা বিঁধেছেন। ভোটের আগে কে বেশি দল ভারী করতে পারে সেই নিয়েই চলছে রেষারেষি। এই মুহূর্তে দলের ভোট ব্যাংক বাড়ানোর দৌড়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে বিজেপি।
রং বদল এপিসোডের এক ঝলক তুলে ধরা হলো। নদীয়ার ধানতলা এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ প্রায় ৮০০ জন তৃণমূলকর্মী যোগদান করলেন গেরুয়া শিবিরে। রানাঘাট লোকসভার বিজেপি সাংসদ তথা গেরুয়া শিবিরের মাস্টারমশাই জগন্নাথ সরকারের উপস্থিতিতেই বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন নতুন সদস্যরা। পদ্ম শিবিরের দাবি, লোকসভা ভোটের ফলাফলের পর থেকে জেলার বিভিন্ন জায়গায় শাসক দল ছেড়ে অনেকে বিজেপিতে যোগদান করছেন। নদীয়ার ধানতলা থানা এলাকার কামালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত ও যুগলকিশোর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১টি বুথের প্রায় ৮০০ জন কট্টর তৃণমূল কর্মী বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, যোগদান করা এই কর্মীদের মধ্যে অনেকেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের রয়েছেন। পতাকা হাতে পাওয়া মাত্রই জেগে উঠলো দলপ্রীতি। শুরু হলো প্রাক্তনের বিরুদ্ধে অভিযোগ। নব্য গেরুয়া কর্মীদের অভিযোগ, রাজ্যের শাসক দল নতুন নেতাকর্মীদের নিয়োগ করার ফলে তাঁদের হাতেই অত্যাচারিত হচ্ছিলেন নিচু তলার কর্মীরা। অভিযোগ আরো রয়েছে, রাজ্য সরকার দিনদিন দুর্নীতিগ্রস্তর শিরোপা অর্জন করছে।
যেভাবে সাধারণ মানুষের টাকা তৃণমূলের নেতারা আত্মসাৎ করছেন সেই কারণেই তাদের এমন সিদ্ধান্ত। বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, দলে যোগদান প্রথম নয় এর আগেও অনেকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছে। এটা ধারাবাহিক ভাবে চলবে। আমাদের সঙ্গে আরো অনেকে যোগাযোগ রেখেছেন আস্তে আস্তে সকলেই তারা বিজেপি তে আসার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরা সকলকে আমাদের দলে স্বাগত জানিয়েছি।