NEET-JEE পিছোনোর দাবিতে ‘সুপ্রিম’ দরজায় মমতা-সনিয়া-সহ ৭ মুখ্যমন্ত্রী

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে বিরোধী শিবির যখনই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করেছে, তখনই ডাক পড়েছে মমতার। ব্যতিক্রম হল না বুধবারও। NEET এবং JEE পরীক্ষা পিছনোর দাবিকে সামনে রেখে বিরোধী শিবির যখন আরও একবার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে, তখনও সব কিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে সেই মমতাই। করোনা পরিস্থিতিতে JEE ও NEET পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন করার সিদ্ধান্ত নিলেন সাত রাজ্যের অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী। পরীক্ষা আয়োজনের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানো হবে বলে বিরোধীদের বৈঠকে সহমত হন উপস্থিত সবাই।
করোনার পরিস্থিতিতে JEE ও NEET পরীক্ষা স্থগিতের জন্য সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার কংগ্রেস ,সভানেত্রী সনিয়া গান্ধির সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে মমতা বলেন, ‘চলুন সবাই মিলে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে আবেদন করি, যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, ততদিন পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে পরীক্ষা স্থগিত রাখা হোক। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই কাজ করছে কেন্দ্র। কিন্তু আদালতের কাছে ফের আবেদন করতে পারে কেন্দ্র। পরীক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থার কথা ভাবা হোক।’
কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা ছাড়াও জল্পনায় জল ঢেলে বৈঠকে উপস্থিত হন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এবং ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সোরেন। হেমন্তের বাবা-মা’র শারীরিক অবস্থা নিয়ে খোঁজ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন হেমন্ত সোরেন বলেন, ‘পরীক্ষা হলে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সম্ভবনা রয়েছে। স্কুল কলেজ খুলতে হবে। পরীক্ষার্থীর সঙ্গে অভিভাবকেরাও যাবেন।’ এ ছাড়াও এ দিনের বৈঠকে ছিলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, ছত্তিসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল ও পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী।
আরও পড়ুন: কেন বাংলায় নতুন বিনিয়োগ হয়না? মমতার জবাব চাইলেন কৈলাস
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথম কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিরোধীদের একজোট হয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি ভালো নয়। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। কীভাবে নিট ও জয়েন্ট এন্ট্রান্স (মেন) পরীক্ষা দেবে ছাত্রছাত্রীরা। রেল চলছে না। পরিবহণ স্বাভাবিক নয়। পরীক্ষার্থীরা মানসিক চাপের মুখে। অনেকে হতাশায় ভুগছে। এখন পরীক্ষার জন্য তারা প্রস্তুত নয়। প্রধানমন্ত্রীর হাতে বিকল্প ছিল। পরীক্ষা স্থগিত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি দু বার। সব মুখ্যমন্ত্রীদের এগিয়ে আসার আবেদন করছি। আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে। আমরা একসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারি।’
অন্যদিকে বিরোধীদের একটি প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হবে। পাঞ্জাব সরকারের নেতৃত্বে এই প্রতিনিধিদল যাবে। মমতাই সোনিয়া এবং ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংকে অনুরোধ করেন, একটি প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে। অর্থাৎ সোনিয়ার ডাকা এই পুরো বৈঠকটাই ছিল ‘মমতাময়’। এই বৈঠকের পর বিরোধী শিবির সরকারের অনড় মানসিকতা বদলাতে পারুক না পারুক, সোনিয়ার নজরে মমতার কদর যে আগের থেকে একটুও কমেনি, তা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল।