বন্যপ্রাণ বাঁচানোর বার্তা নিয়ে বাইক সফর একদল যুবকের

ভাস্করব্রত পতি, তমলুক: লক্ষ্য মালভূমির পরিবেশ বাঁচানো এবং বণ্যপ্রাণ বাঁচানো। তাই তিন দিনের সফরে সেই পরিবেশ সচেতনতা, মালভূমি সংরক্ষণ, বন ও বনপ্রাণ সংরক্ষণের বার্তা নিয়ে তমলুক থেকে সিমলাপাল পর্যন্ত বাইক যাত্রা শেষ করলেন একদল যুবক।
মেদিনীপুরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র সদস্য তাঁরা।
সংগঠনের সম্পাদক সুজন বেরা বলেন,’এবারের এই যাত্রায় আমাদের মূল বার্তা হল “মালভূমি বাঁচাও ও বন্যপ্রাণ বাঁচাও”। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের মোট ২২ জন সদস্যের অভিযাত্রী দল এই যাত্রায় অংশ নিয়েছে। প্রত্যেকেই সংগঠনের নানা গঠনমূলক কাজে সবসময়ই এগিয়ে থাকে। এতোদিন মেদিনীপুরের মধ্যেই কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ ছিল। এবার মেদিনীপুর ছাড়িয়ে ওড়িশার জঙ্গলে পা ফেললেন তাঁরা।
দলবদ্ধ ভাবে যাত্রা শুরুর আগে একটি টিম যাত্রা শুরু করে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে। অপর টিম শুরু করে মেদিনীপুর কলেজ মাঠ থেকে। পরে খড়গপুর চৌরঙ্গী থেকে একজোট হয়ে এগিয়ে যান বাইক আরোহীরা। মেদিনীপুর কলেজ মাঠে এই যাত্রার সূচনা করেন কুইজ কেন্দ্রের সভাপতি রিংকু চক্রবর্তী। এই পুরো টিমে টিম লিডার হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অরিন্দম দাস। সঙ্গে রয়েছেন কুইজ কেন্দ্রের সম্পাদক সুজন বেরা, ড. মৌসম মজুমদার সহ অন্যান্যরা।
বাংরিপোসি, ব্রম্ভকুণ্ড, যোশিপুর, সিমলিপাল, খিচিং, বাদামপাহাড়, সুলেইপাত ড্যাম, বাঁকবাল ড্যাম, বহড়াগোড়া হয়ে দীর্ঘ প্রায় আটশো কিলোমিটার রাস্তায় তাঁরা এই প্রচার করে। শালগাছের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। অথচ এই শালগাছই এখানকার প্রান্তিক মানুষের মূলধন। তাই এগুলোকে বাঁচানোর বার্তা দেওয়া হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে। গোটা সিমলিপাল অভয়ারণ্যে একটিও পাখি দেখতে পাওয়া যায় নি বলে অভিমত সদস্যদের। এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের মধ্যে এহেন পরিস্থিতি খুব অবাক করে দিয়েছে পরিবেশপ্রেমী বাইক যাত্রীদের।
অভিযাত্রী দলটিতে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ছিলেন কৃষ্ণপ্রসাদ ঘড়া, অপূর্ব কুমার জানা, দীপ বসু গৌতম নন্দ, জয়দেব মন্ডল, কালীচরণ দাস, শুভময় মজুমদার, অলোক মাইতি এবং হারধন মনি। অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ছিলেন সুভাষ জানা, ড. প্রসূন কুমার পড়িয়া, সন্তু জানা, মণিকাঞ্চন রায়, শান্তনু ঘোষ, শুভ্রাংশু সামন্ত, শান্তনু অধিকারী, পূর্ণ চন্দ্র ভূঁইয়া এবং নরসিংহ দাস।
আরও পড়ুন: উঠল নিষেধাজ্ঞা, এবার থেকে সপ্তাহে ৭ দিন দিল্লি-কলকাতা রুটে সরাসরি উড়ান
সংগঠনের অন্যতম কর্মকর্তা ড. মৌসম মজুমদার বলেন, খুব শিগগিরই সুন্দরবনের মৌসুনি দ্বীপে যাওয়া হবে ওখানকার মানুষের কাছে সাহায্যের লক্ষ্যে। ইতিমধ্যে পরিবেশ বাঁচানোর দাবিতে চাঁদিপুর থেকে দীঘা ১০৭ কিমি কোস্টাল ট্রেকিং, মেদিনীপুর থেকে নবান্ন ও তমলুক থেকে দীঘা সাইকেল যাত্রা করা হয়েছে। দারুণ সাড়া মিলেছিল। এবার বাইকে মাত্রা ওড়িশায়। এই লকডাউন পরিস্থিতিতে সংগঠনের সদস্যরা নানা স্থানে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সাহায্যের ডালি নিয়ে।