
অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: মনের জোর থাকলে যে কোনও বয়সেই যে কোনও রোগকে যে জয় করে ফিরে আসা সম্ভব, তা দেখিয়ে দিলেন প্রখ্যাত ইএনটি সার্জেন্ট বারিন রায়চৌধুরীর স্ত্রী লীলা রায়চৌধুরী। নিউমোনিয়া ভয়ঙ্কর ভাবে থাবা বসিয়েছিল তাঁর শরীরে।
২৪ দিন একমো-সহ টানা ৪৯ দিন ভেন্টিলেশনে এবং সব মিলিয়ে ৬৪ দিন হাসপাতালে ছিলেন তিনি। তারপরেও জীবনের পথে ফিরে ঢাকুরিয়া এলাকার আমরি হাসপাতালে অনন্য নজির গড়লেন ওই প্রবীণা।
প্রসঙ্গত, লীলাদেবীর নিউমোনিয়া ধরা পড়লেও বাইরে থেকে কোন উপসর্গ বোঝা যাচ্ছিল না। শুধু রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছিল। প্রথমে ২ জুন তিনি মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সে নিয়ে যান স্ত্রীকে নিয়ে যান চিকিৎসক স্বামী। কিন্তু রোগীর শারীরিক পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে থাকে। এরপর রোগীকে ঢাকুরিয়া আমরিতে ডা. সোহম মজুমদার ও ডা. মহুয়া ভট্টাচার্যের অধীনে ভর্তি করা হয়। তারপর প্রায় ৪৯ দিন যমে–মানুষে টানাটানি। আইএনকে থেকে ২৪ জুন আমরিতে আসেন লীলাদেবী। প্রথম দিন থেকেই ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ২৫ জুন থেকে ২০ জুলাই একমো সাপোর্ট দিতে হয়। ১১ আগস্ট পর্যন্ত ভেন্টিলেশনেই ছিলেন। তবে এতোদিনেও একবারও তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়েনি। যদিও সমস্ত উপসর্গ ছিল করোনার মতই।
মেডিকেল কেয়ার বিশেষজ্ঞ মহুয়া ভট্টাচার্য বলেন, “বিষয়টি সত্যিই চ্যালেঞ্জিং ছিল। সাফল্য পেয়েছি আমরা সকলেই খুশি। তবে রোগীর দীর্ঘদিন ভেন্টিলেশনে থাকায় কিছু দুর্বলতা এসেছে। সেগুলো চিকিৎসক স্বামীর পরামর্শে ফিজিওথেরাপি করে কেটে যাবে।” বৃহস্পতিবার রাতে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে অবশেষে পরিবারের সঙ্গে বাড়ি ফিরলেন লীলা রায়চৌধুরী। স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফেরার দিন বারিনবাবু বলেন, “চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং চিকিৎসকদের মেলবন্ধনেই এমন সাফল্য। সত্যিই খুব ভালো লাগছে।”