গুরুত্বপূর্ণপশ্চিমবঙ্গহেডলাইন
বাংলায় জরুরি অবস্থা জারির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে: ধনকর

নিজস্ব প্রতিনিধি, দার্জিলিং: দীর্ঘ একমাস পাহাড়ে কাটানোর পর দার্জিলিং রাজভবনে প্রথমবারের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্যপাল জগদীশ ধনকর। বাংলায় ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ পর্যায় চলছে বলেও কটাক্ষ করলেন তিনি। একইসঙ্গে জানালেন রাজ্যে জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
কেন তিনি বলছেন এ কথা?
তাঁর ব্যাখ্যা, ‘ বিরোধীদের সমস্ত কাজেই বাধা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁদের এতটুকু জায়গা দেওয়া হচ্ছে না। বিরোধীদের কোনও কার্যকলাপেই মিলছে না অনুমতি। জরুরি অবস্থা জারির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজ্যে। ‘ তিনি বলেন, ‘বাংলার সংস্কৃতিতে ঔদ্ধত্যের কোনও স্থান নেই। তা সত্ত্বেও অনেকের কথার মাধ্যমে শক্তি এবং ঔদ্ধত্য প্রকাশ পাচ্ছে। যা আমাকে সত্যিই ব্যথিত করে। প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ সংবিধান মেনে কাজ করুন। গণতন্ত্রের বিরোধী হবেন না। রাজনৈতিক দলদাস হয়ে কাজ করবেন না। জানি সত্যি তা বড় কঠিন। কারণ আপনাদের হাত-পা বাঁধা। তবু যারা এ কাজ করছেন তাদের বিরোধিতা করুন।’
তিনি দাবি করেছেন, এই সময়ের মধ্যে একাধিক জটিল বিষয় উন্মোচিত হয়েছে। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সাংবিধানিক নিয়ম মেনে চলা হচ্ছে না বলে তিনি আবার সরব হন। তাঁর অভিযোগ,’ পাহাড়ে জল, রাস্তা এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সমস্যা থাকলেও তা সমাধানে বাংলার সরকার কোনও চেষ্টা করেনি। রাজ্যের প্রত্যেক মানুষের কাছে প্রকল্পগুলির সুবিধা পৌঁছে দিতে সরকারের আরও সুসংগঠিত হওয়ার প্রয়োজন।’ তাঁর পরামর্শ, চা এবং পর্যটন শিল্পকে হাতিয়ার করে রাজ্যের উন্নয়নের কথা ভাবা প্রয়োজন। বলাইবাহুল্য, রাজ্যপালের তোপ দাগার পর নবান্নের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের রসায়নে আরও ফাটল বাড়লো বলে তথ্যাভিঞ্জ মহলের ধারণা।
গত সপ্তাহে একাধিকবার গরুপাচার এবং কয়লা কাণ্ডে গ্রেপ্তারির প্রসঙ্গে টুইট করেন রাজ্যপাল। দু’জন অভিযুক্তকে আড়াল করা এবং তদন্তে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে ধনকড়ের বিরুদ্ধে ওঠে অভিযোগ। সাংবাদিক বৈঠকে সে বিষয়টিও আরও একবার তুলে ধরেন তিনি। তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগেও সুর চড়ান রাজ্যপাল। নবান্ন-রাজভবনের মধ্যে টুইট-পালটা টুইট এবং পত্রবোমা আদানপ্রদান লেগেই থাকে। তারই মাঝে রাজ্যপালের এই সাংবাদিক বৈঠক দু’পক্ষের সম্পর্কের মধ্যে তিক্ততা এক ধাক্কায় আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে, তা বলাই যায়।