fbpx
বাংলাদেশহেডলাইন

দুই দেশের মধ্যে আরও একধাপ এগোল সম্পর্ক, মোদী-হাসিনা বৈঠকে সম্পন্ন হল ৭ চুক্তি  

যুগশঙ্খ, ওয়েবডেস্ক: ভারতের মাটিতে পা দিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করাই অন্যতম উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার সেই সম্পর্ক উন্নয়নে আরেক ধাপ এগোল বাংলাদেশ ও ভারত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে নতুন সাতটি চুক্তি করেছে প্রতিবেশী দুই দেশ। অঙ্গীকার এসেছে অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি স্বাক্ষরের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিপদে সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকা ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট থাকবে। আর নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও প্রগতিশীল বাংলাদেশরে রূপকল্প বাস্তবায়নে ভারত-বাংলাদেশ পায়ে পা মিলিয়ে চলবে।

চার দিনের সফরের দ্বিতীয় দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রপতি ভবনে দেওয়া হয় গার্ড অফ অনার। হিন্দিতেও বক্তব্য রাখেন তিনি। সেই সময় তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থলে গিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর শুরু হয় উপমহাদেশের দুই শীর্ষ নেতার সিরিজ বৈঠক। নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক হায়দরাবাদ হাউসে প্রথমে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী। এরপর হয় একান্ত বৈঠক। পরে দুই দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে হয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসেন দুই প্রধানমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনস্থলেই আগে হয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও বিনিময়। একে একে সাতটি সমঝোতা স্মারকে আবদ্ধ হয় বাংলাদেশ ও ভারত। সাতটি সমঝোতা স্মারক হলো- ১. কুশিয়ারা নদী থেকে বাংলাদেশ কর্তৃক ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ)। ২. বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা বিষয়ে ভারতের বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (সিএসআইআর) সঙ্গে বাংলাদেশের সিএসআইআরের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক। ৩. বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে ভারতের ভোপালে অবস্থিত ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক। ৪. ভারতের রেলওয়ের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোয় বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য দুই দেশের রেল মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা স্মারক। ৫. বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্যপ্রযুক্তিগত সহযোগিতার জন্য ভারত ও বাংলাদেশের রেল মন্ত্রণালয়ের আরেকটি সমঝোতা স্মারক। ৬. ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম ‘প্রসার ভারতীর’ সঙ্গে বাংলাদেশ টেলিভিশনের একটি সমঝোতা স্মারক। ৭. বিএসসিএল ও এনএসআইএলের মধ্যে মহাশূন্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতাবিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক।

সমঝোতা স্মারক হস্তান্তর শেষে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রূপসা রেলসেতুসহ পাঁচটি বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। এগুলো হলো- ১. মৈত্রী সুপার থারমাল পাওয়ার প্রজেক্টের (রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প) প্রথম ইউনিট ২. খুলনার রূপসা রেলসেতু ৩. বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগের ২৫টি প্যাকেজে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ ও নির্মাণ সরঞ্জাম এবং যন্ত্রপাতি সরবরাহ ৪. খুলনা-দর্শনা রেললাইন সংযোগ প্রকল্প ৫. পার্বতীপুর-কাউনিয়া মিটার-গেজ রেললাইনকে ডুয়েল-গেজ লাইনে রূপান্তর প্রকল্প।

 

এর পরই প্রথমে বক্তব্য দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আমি বহু দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছি।’ দুই দেশের সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমাদের সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষে মানুষে সংযোগের ক্ষেত্রে অব্যাহত উন্নতি হচ্ছে। কভিড মহামারি ও সাম্প্রতিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া এবং আমাদের অর্থনীতি শক্তিশালী করা দরকার।’ মোদী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে উন্নয়ন হয়েছে।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ধন্যবাদ জানাই, আজকে আমরা কুশিয়ারা ইস্যু সমাধান করেছি এবং আমি আশাবাদী, মোট যে ৫৪টি নদী আছে সেগুলো যতক্ষণ পর্যন্ত মোদী আছেন, বাংলাদেশ-ভারত আমরা সব সমস্যার সমাধান করে ফেলব।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে অনেক  সমস্যার  সমাধান  করেছি। আমি আশা করি তিস্তার জলবণ্টন চুক্তিসহ অন্য  বিষয়গুলো শীঘ্রই সম্পন্ন করতে পারব।’

Related Articles

Back to top button
Close