বিয়ের পর থেকে পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় নয় মাস…এখনও রুপশ্রী প্রকল্পের টাকা পেলেন না তরুণী

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: বিয়ের পর থেকে পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় ন’মাস। তবু বিয়ের আগে আবেদন করেও এখনও সরকারী রুপশ্রী প্রকল্পের টাকা হাতে পেলেন না তরুণী সানজিদা ইয়াসমিন । এই ঘটনায় চড়ান্ত বিপাকে পড়ে গিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের গলসি ১ ব্লকের উচ্চগ্রাম পঞ্চায়েতের সিংপুর নিবাসী তরুণীর বাবা মা। টাকা পাওয়ার জন্য তরুণী ও তাঁর প্রতিবন্ধী বাবা সেখ মেহেবুব রহমান এখনও প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন । যাদিও দেরিতে হলেও তরুণী রুপশ্রী প্রকল্পের টাকা পাবেন এমন কোন আশ্বাস অবশ্য প্রশাসনের কর্তাদের কাছ থেকে তারা পাননি।
গলসির সিংপুর গ্রাম নিবাসী প্রতিবন্ধী শেখ মেহেবুব রহমান চাষ বাস করেই জীবিকা নির্বাহ করেন ।চলতি বছরের ১০ মার্চ পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার গ্রামে মেয়ে সানজিদার বিয়ের দেন মেহেবুব রহমান । বিয়ের আগে ওই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারী সানজিদা রূপশ্রী প্রকল্পের আর্থিক সাহায্য পাবার জন্য গলসি ১ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিসে আবেদন করেন। তারপরে ২৩ এপ্রিল তার বাবার মোবাইলে একটি মেসেজ আসে।তাতে উল্লেখ থাকে সানজিদার আবেদন রুপশ্রী প্রকল্পে আই ডি তে আপলোড হয়েছে । মেসেজে সানজিদার আই ডি নম্বরও উল্লেখ করা থাকে ।এরপর গত ২৩ মে সানজিদার কন্যাশ্রী আইডি দিয়ে পুনরায় ম্যাসেজে আসে ।সেই মেসেজে উল্লেখ করা হয় সানজিদার আবেদন রুপশ্রী প্রকল্পের অর্থ প্রাপ্তির জন্য অনুমোদিত হয়েছে । তারপর থেকে আরকোন মেসেজ আসেনি সানজিদার বাবার মোবাইল ফোনে ।
তরুণী সানজিদা ও তাঁর বাবা মা মঙ্গলবার বলেন, কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা পাবার জন্য আবেদন করার পরথেকে প্রায় নয় মাস পেরিয়ে গেলেও একাউন্টে কোনও টাকা ঢোকেনি। সানজিদা জানান, রুপশ্রী প্রকল্পের টাকা পাবার জন্য বহুবার বিডিও অফিসে গিয়ে তিনি দরবার করেছেন। কিন্তু সমস্যার কোন সমাধান হয়নি। সমস্যার সমাধানের জন্য প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের সহযোগীতাও পাচ্ছেন না । আদৌ আর সরকারি কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা মিলবে কিনা তার সুদুত্তরও প্রশাসনের কর্তাদের কাছ থেকে মিলছে না বলে সানজিদার বাবা সেখ মেহেবুব রহমান মন্তব্য করেছেন । একই সঙ্গে তিনি বলেন , ধার দেনা করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। রুপশ্রী প্রকল্পের অর্থ মিললে তবেই ধারদেনা শোধ করতে পারবেন । মা নাজিয়ারা সেখ বলেন, তাঁদের অভাবের সংসার।তাই ধানদেনা করেই মেয়ের বিয়ে দিতে হয়েছে। রূপশ্রী প্রকল্পের টাকাটা না পাওয়ায় তাঁর স্বামী এখনও মেয়ের বিয়ের দেনা শোধ করতে পারি। এই পরিস্থিতিতে কি করবেন সেটাও বুঝে উঠতে পারছেন না । এই বিষয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধীপতি শম্পা ধাড়া বলেন, কেন রুপশ্রী প্রকল্পের টাকা পেতে দেরি হচ্ছে সেই বিষয়ে তিনি খোঁজ খবর নেবেন ।