fbpx
কলকাতাগুরুত্বপূর্ণদেশহেডলাইন

মহরম মিছিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেন সংখ্যালঘুরা

মোকতার হোসেন মন্ডল: মহরম মিছিল নিয়ে সুপ্রিমকোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেন মুসলিমরা। বৃহস্পতিবার নাখোদা মসজিদের ইমাম মাওলানা শফিক কাসেমী,ফুরফুরা দরবার শরীফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী, সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সহ বেশ কিছু মুসলিম করোনা আবহে মহরম মিছিল প্রসঙ্গে সুপ্রিমকোর্ট যা বলেছে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন।

মহরমের শোভাযাত্রার অনুমতি চেয়েই সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। জনৈক ব্যাক্তির সর্বোচ্চ আদালতের কাছে আবেদন ছিল, শর্তসাপেক্ষে পুরীর রথযাত্রায় অনুমতি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট, আবার মুম্বইয়ে ‘পরিশান’ উৎসবের জন্য জৈন সম্প্রদায়কেও ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তেমনই মহরমের তাজিয়া বের করার ক্ষেত্রেও অনুমতি দিক সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু করোনার এই পরিস্থিতিতে সারা দেশে মহরমের তাজিয়া বের করতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়। সর্বোচ্চ আদালতের যুক্তি, ‘জৈনদের উৎসব বা পুরীর রথযাত্রার ক্ষেত্রে কতটা ঝুঁকি হতে পারে, সেই মাত্রা মূল্যায়ন করা গিয়েছিল। কারণ সেটা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় হচ্ছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে সারা দেশের জন্য মহরমের তাজিয়ার অনুমতির আর্জি জানানো হয়েছিল। কোনও নির্দিষ্ট জায়গার জন্য আর্জি জানানো হলে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা যেত।’

শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সারা দেশের মানুষের স্বাস্থ্যের সুরক্ষার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এদিন মহরমের তাজিয়ার অনুমতি খারিজ করে দিয়ে জানায়, ‘সারা দেশের জন্য একটি রায় দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু গোটা দেশে মহরমের তাজিয়ার জন্য একই রকম নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়। মহরমের শোভাযাত্রায় অনুমতি দেওয়া হলে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে।’

সুপ্রিম কোর্ট আগাম পরিস্থিতির কথা ভেবে জানায়, ‘দেশে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে তার জন্য পুরো সম্প্রদায়ের মানুষকেই কাঠগড়ায় তোলা হবে। আমরা সেটা চাই না৷ তাই মহরমের অনুমতি দেওয়ার অর্থ একটা গোটা সম্প্রদায়কে সমস্যার মধ্যে ঠেলে দেওয়া।’

এ প্রসঙ্গে কলকাতার নাখোদা মসজিদের ইমাম মাওলানা শফিক কাসেমী জানান, সুপ্রিমকোর্টের এই রায়টিকে স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা আগেই মুসলিম সমাজকে বলেছিলাম, করোনা আবহে তাজিয়া মিছিল না বের করতে। মহরমে বাড়িতে থেকে আল্লাহ কে ডাকতে হবে। পথে বেরিয়ে তাজিয়া মিছিলের দরকার নেই।

ফুরফুরা দরবার শরীফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী বলেন, সুপ্রিমকোর্টের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি।এই আইন যেন প্রতিটি জাতির জন্য সমান হয়। করোনা পরিস্থিতিতে মহরম উপলক্ষে সবাইকে সচেতন হতে হবে। আমরা ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা,রোজা বাড়িতে করেছি। তাছাড়া মহরমকে কেন্দ্র একদল মানুষ তাজিয়া মিছিল করেন,এগুলো ইসলামে কতটা অনুমোদন আছে? শরীয়ত বিরোধী কোনও কাজ করা ঠিক নয়। আর মহরমটা শুধু ইমাম হোসেনকে কেন্দ্র করে নয়, এটা পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে হয়। মহরম মাস মুসলিমদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ৯ ও ১০ মহরম রোজা রাখতে হবে,বাড়িতেই ইবাদত করতে হবে। নামাজ, রোজা না করে ঢোল তবলা নিয়ে পথে পথে মিছিল করার প্রয়োজন নেই।

সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, সুপ্রিমকোর্টের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। করোনা আবহে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। কোর্ট যে রায় দিয়েছে,সবার ক্ষেত্রেও যেন তেমন হয়। আমার অনুরোধ, মহরমের সময় বাড়িতে থাকুন,আল্লাহকে ডাকুন।
রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান বিধায়ক আব্দুল গনি কোর্টের রায় নিয়ে কিছু মন্তব্য করতে রাজি হননি।

Related Articles

Back to top button
Close