বোলপুর থানার লকআপে যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ, অভিযুক্ত আইসির আত্মসর্ম্পণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, বোলপুর: বোলপুর থানার লকআপে এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগে চালক আগেই গ্রেফতার হলেও রবিবার উত্তর চব্বিশ পরগনার নরেন্দ্রপুর থানায় আত্মসর্ম্পণ করেন আইসি প্রবীর কুমার দত্ত। মঙ্গলবার বোলপুর মহকুমা আদালতে তাকে তোলা হলে ৭ দিলের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের ১১ই আগষ্ট বোলপুরের বাসিন্দা রাজু থান্দার নামে এক যুবকে চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে বোলপুর থানার পুলিশ।
১৪ আগষ্ট পুলিশ হেপাজতে থাকাকালীন তার মৃত্যু হয়। তদন্ত রিপোর্টে দেখে যায় মাথায় গুরত্বর আঘাতের জন্য হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে রাজুর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ ওঠে আইসি এবং তার চালকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনা সামনে আসতেই মৃতের পরিবার লোকজন বোলপুর থানায় বিক্ষোভ দেখায়। সিআইডি তদন্ত ভার নেয় । ২০২০ সালের জুলাই মাসে সিআইডি-র দেওয়া প্রথম চার্যসিটে প্রবীর কুমার দত্তের নাম না থাকলেও চালক নান্টু মন্ডলের নাম ছিল। পুলিশ নান্টুকে গ্রেফতার করে। পরে ২০২০ সালে ৫ অক্টোবর সিআইডি সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিট জমা দিলে সেখানে প্রবীর কুমার দত্তের নাম ছিল।
এর পর প্রবীরবাবুকে গ্রেফতার করার জন্য চাপ বাড়তে থাকে। বোলপুর মহকুমা দালতের সরকারি আইনজীবী ফিরোজ পাল বলেন, গত ৮ নভেম্বর উত্তর চব্বিশ পরগনার নরেন্দ্রপুর থানায় প্রবীর কুমার দত্ত আত্মসর্ম্পন করে। ৯ তারিখে তাকে বারুইপুর আদালতে তোলা হয় এবং মঙ্গলবার ট্রানজিট রিমান্ডে তাকে বোলপুর মহকুমা আদালতে আনা হয়। অসুস্থ থাকার জন্য তিনি আদালত চত্ত্বরে অ্যাম্বুলেন্স থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত হন।
তাঁর বিরুদ্ধে (166, 167, 323, 325, 342, 343, 304, 120বি) এই ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালতের কাছে জামিনের আবেদন করলে তা গ্রাহ্য হয়নি। ৭ দিনের জেল হেফাজত দেওয়া হয়েছে। আসামী পক্ষের আইনজীবী উদয় কুমার গড়াই বলেন, সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিটে প্রবীর কুমার দত্তের নাম দেওয়া হয়েছে। অসুস্থ থাকায় তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বোলপুর কোর্টে নিয়ে আসা হয়। আগামী ১৮ তারিখে তাকে আবার আদালতে তোলা হবে।
এপিডিআর এর পক্ষে শৈলেন মিশ্র বলেন, আইসি এবং তার চালক রাজুকে পিটিয়ে মেরে ছিল। পুলিশ তদন্তের মুখ ঘোরাতে চাইলেও দীর্ঘ আন্দোলনের জন্য এই গ্রেফতার। দুজনের কঠোর শাস্তির দাবী করছি।