শ্লীলতাহানি, প্রতিবাদ করতে গেলে নির্যাতিতার বাবা-মাকে মারধর অভিযুক্তদের
মিল্টন পাল, মালদা: গ্রামের রাস্তা দিয়ে সন্ধ্যাবেলায় বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথে নাবালিকা ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি। ঘটনা জানতে পেরে মেয়ের শ্লীলতাহানি প্রতিবাদ করতে গেলে ব্যাপক মারধর ছাত্রীর বাবা মাকে। মালদার মানিকচকের নাজিরপুর অঞ্চলের লক্ষ্মীকোলের গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। আহত বাবা ও মা মানিকচক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গোটা ঘটনায় চার যুবকের বিরুদ্ধে মানিকচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের পরিবারের। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই ছাত্রী স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে। বৃহস্পতিবার প্রতিবেশীর বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য রাতে গ্রামের রাস্তা ধরে পাশের পাড়ায় একটি বিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিল। সেই সময় গ্রামের চার যুবক রাম মাঝি সরকার, শ্যাম মাঝি সরকার, সুকুমার মাঝি সরকার ও বাবলু মন্ডল সপ্তম শ্রেণীর ওই ছাত্রীর পথ আটকায় এবং তার শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। কোন রকমে চার যুবকের হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে দৌড়ে বাড়ি পালিয়ে যাই। বাড়ি ফিরে সমস্ত ঘটনা বাবা মাকে জানায়।
আরও পড়ুন:করোনা কাটায় প্রিয়জনের অস্থি নিতে অনিহা, বিপাকে পুরসভা
ঘটনা শুনেই মেয়ের শ্লীলতাহানি প্রতিবাদ করতে গেলে অভিযুক্ত ওই চার যুবক নির্যাতিত ওই ছাত্রীর বাবা-মাকে রাস্তায় ফেলে ব্যাপক মারধর করে। ঘটনার চিৎকার চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে অভিযুক্ত ওই চার যুবকের হাত থেকে আহত বাবা-মাকে উদ্ধার করে। ঘটনা বেগতিক দেখে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। মারধরে গুরুতর আহত অবস্থায় নির্যাতিতার বাবা-মাকে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করে স্থানীয় মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর শুক্রবারেই মেয়ের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ জানিয়ে চার অভিযুক্ত যুবক রাম মাঝি সরকার, শ্যাম মাঝি সরকার, সুকুমার মাঝি সরকার ও বাবলু মন্ডলের বিরুদ্ধে মানিকচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার মা।
গ্রামের বাসিন্দা এক বাসিন্দা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই গ্রামের মধ্যে কিছু যুবক মহিলাদের উত্ত্যক্ত অত্যাচার শুরু করেছে। ঘটনাটি পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। যদিও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ প্রশাসন। পুলিশ যদি ব্যবস্থা নিত তাহলে এদিন এধরনের ঘটনা ঘটত না। আমরা চাই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক। যাতে কোন দিন এ ধরনের ঘটনা তারা ঘটাতে আর না পারে।
এলাকা থেকে নির্বাচিত মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌর চন্দ্র মন্ডল বলেন, এ ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশকে বলা হয়েছে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। তাদের খোঁজে এলাকাজুড়ে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।