টাওয়ার বসানোর টোপ দিয়ে ৮০ লক্ষ টাকা প্রতারণা, কাটোয়া পুলিশের উদ্যোগে ধৃত অভিযুক্ত

দিব্যেন্দু রায়, কাটোয়া: মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিষেবা সরবরাহকারী একটি নামি সংস্থার বিজনেস পার্টনার করার নামে ও বাড়ির ছাদে ওই সংস্থার টাওয়ার বসানোর টোপ দিয়ে কাটোয়া শহরের বাসিন্দা হরিপদ কয়াল নামে অবসরপ্রাপ্ত এক ব্যঙ্ককর্মীর কাছে ২৮ লক্ষাধিক টাকার প্রতারনা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় প্রকাশ যাদব ওরফে মহেন্দ্র হিওরালে ওরফে মহেশ সিং ওরফে শঙ্কর হিওরালে নামে এক অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নিল কাটোয়া থানার পুলিশ। একাধিক নামধারী ওই ব্যক্তির বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বেলঘরিয়া থানা এলাকার দক্ষিণ নওদাপাড়া গ্রামে বলে খবর।
জানা গিয়েছে, হরিপদ কয়াল নামে প্রতারিত ওই ব্যক্তি গতবছর এপ্রিল মাসে কাটোয়া থানার একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, প্রথমে একটা অচেনা নম্বর থেকে তাঁর মোবাইলের একটি ফোন আসে। ফোনের অন্য প্রান্তের ব্যক্তি নিজেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিষেবা সরবরাহকারী একটি নামি সংস্থার আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দেয়। তারপর ওই ব্যক্তি জানতে চায় তিনি বাড়ির ছাদে মোবাইলের টাওয়ার বসাতে আগ্রহী কিনা। কিছু রোজগারের আশায় তিনি রাজি হয়ে যান বলে জানিয়েছেন হরিপদবাবু।
হরিপদবাবু পুলিশের কাছে জানিয়েছেন, তিনি সম্মতি দিলে ওই ব্যক্তি প্রথমে কিছু শর্ত রাখে। শর্ত অনুযায়ী প্রথমে তাঁকে ১৭৭০০ টাকা দিয়ে একটা ইন্সসিওর করানো হয়। তারপর গতবছর ফ্রেবুয়ারি মাস থেকে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত নানান অছিলায় তাঁর কাছ থেকে কয়েক ধাপে ২৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা আদায় করে। শেষে সন্দেহ হলে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। জানা গিয়েছে, গতবছর ৪ এপ্রিল প্রতারিত ব্যক্তি কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করলে ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। এরপর মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ অভিজিত দে ও প্রদীপ রায় নামে দুই ব্যক্তির নাম জানতে পারে। তাদের সন্ধান চালাতে গিয়ে পুলিশ জানতে তারা অন্য মামলায় হুগলির সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছে তারা। তাদের হদিশ পাওয়ার পর চলতি বছর আগস্ট মাসে কাটোয়া থানার পুলিশ তাদের নিজেদের হেফাজতে নেয়। এরপর তাদের জেরা করে বর্ধমান জেলে বন্দি ওই ব্যক্তির নাম জানতে পারে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, মেমারি ও ভাতার থানার দুটি পৃথক মামলায় অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির ঠাঁই হয়েছিল বর্ধমান জেলা সংশোধনাগারে। পুলিশ তার হদিশ পেতেই কাটোয়ার প্রাক্তন ব্যাঙ্ক কর্মীকে প্রতারনা মামলার তদন্তের স্বার্থে কাটোয়া থানার পুলিশ তাকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায়। বিচারক তাকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন। এই চক্রে আর কারা যুক্ত আছে ধৃতকে জেরা করে তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।