শংকর দত্ত, কলকাতা : লকডাউন শুরু ইস্তক প্রথম থেকেই রাজ্যের পরিযায়ী শ্রীমিকদের নিয়ে তিনি সরব ছিলেন। এ এনিয়ে একাধিক বার রাজ্যকে কেন্দ্রের তিনি নীতিগত সমালোচনা করেছেন। দিল্লিতে থাকাকালীন নিজে পরিযায়ী শ্রমিকদের অভাব-অভিযোগ সমস্যা নিয়ে সুরাহার চেষ্টা করেছেন। নিজে উদ্যোগী হয়ে কেন্দ্রীয় সারষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে কথা বলেছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছেন বহুবার। তিনি অধীর চৌধুরী। লোকসভার বিরোধী দলনেতা। এ রাজ্যের সাংসদ।
লকডাউনের কারণে প্রায় দুই মাস দিল্লিতে আটকে ছিলেন। বিমান পরিষেবা চালু হতেই কলকাতায় পা রাখলেন বৃহস্পতিবারই। আর বিমানবন্দরে নেমেই একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। কী বললেন তিনি?
এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘লকডাউন কেন চালু হয়েছিল? করোনা মোকাবিলায় স্থায়ী বা অস্থায়ী চিকিৎসা পরিকাঠামো গঠন করবার জন্য। কিন্তু আপনি তা করলেন না। আর এখন নিজের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন।এটা কোনো মুখ্যমন্ত্রীকে শোভা পায় না।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘বাংলায় করোনা সংক্রমণ কবে শুরু হয়, আর যখন শুরু হয় তখন এই পরিযায়ী শ্রমিকরা কোথায় ছিলো?’ তিনি চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিতে চান রাজ্যের আর্থিক উন্নয়নে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভূমিকাও।
তাঁর দাবী, ‘এত দিন এই পরিযায়ী শ্রমিকরাই কোটি কোটি টাকা পাঠিয়েছে এ রাজ্যে। আর তাঁদের উপার্জন করা টাকাই রাজ্যেরও আর্থিক উন্নয়ন ঘটেছে।’ একই সঙ্গে তাঁর বিস্ফোরক মন্তব্য, ‘রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা কেউ করোনা দৈত্য নয়। পরিযায়ী মানুষদের নিয়ে আপনার বিষোদগার দুর্ভাগ্য জনক । ‘
প্রসঙ্গত ঈদের দিনই তাঁর এ রাজ্যে ফেরবার ইচ্ছে ছিলো বলে তিনি জানান। নিজের এলাকার মানুষের সঙ্গে ঈদের দিনটি তিনি কাটাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিমান বিভ্রাটের কারণেই তিনি আস্তে পারেননি। যদিও এ জন্যও তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই কাঠ গোড়ায় তোলেন। কারণ করোনা ও আমফান পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য রাজ্য সরকারই ঘরোয়া বিমান পরিষেবা চালাতে বাধা দিয়েছিলো বলে তার অভিযোগ। তিনি রাজ্যের বিরূদ্ধে ক্ষোভ উগরে বলেন, ‘ আসলে রাজ্য সরকার চাই না মানুষ বাড়ি ফিরুক। উনি ট্রেনে করে শ্রমিকদের ফেরাতে অনীহা দেখান। অথচ এই লকডাউনের মধ্যেই হাজার হাজার বাস,ট্রাক, ছোট গাড়ি রাজ্যে ঢুকে গেলো।’
শুধু এখানেই থেমে থাকেননি বহরমপুরের এই একচ্ছত্র শিবাজী। তার কথায়, কত মানুষ বাইরে আটকে আছে এখনো। কত ছাত্রছাত্রী, পর্যটক,চিকিৎসার কারণে যাওয়া অসহায় মানুষ কী নিদারুণ দিন কাটাচ্ছেন। সে ব্যাপারে ওনার কোনও ভাবনা নেই আজও।’ একই সঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের মনে করিয়ে দেন, ‘পরিযায়ী শ্রমিকদের ধীরে ধীরে ট্রেনে করে ঘরে ফিরিয়ে আনতে অনুরোধ করে ছিলাম। বলেছিলাম ট্রেনে ওঠার আগে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট দিতে হবে। নামবার পর আবার টেস্ট করে যে যার এলাকায় ফেরাতে হবে। এবং তাদের ওপর নজরদারি রাখতে হবে।’ এই পুরানো দাবীর কথা মনে করিয়ে দিয়েই মমতাকে তিনি শ্লেষ বিধ করেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী আমি ট্রেন দিতে রাজি হলেন না।কিন্তু বাস -ট্রাক,গাড়ি আসতে কোনও বাধা রইলো না।