শরণানন্দ দাস, কলকাতা: ফেলে আসা ধানসিঁড়ি নদি, গ্রাম, আমের বাগান, হাঁস চৈ চৈ বিলের সঙ্গে যদি হঠাৎ দেখা হয়ে যায়! বছর ৪০ পরে সীমান্তের কাঁটাতারের ওপারে হারিয়ে ফেলা মায়ের সঙ্গে যদি কথা হয় ,তবে কেমন হবে?
সিনেমায় যেমন হয়, তেমনই ঘটেছে বাস্তবে। আর সেই কাণ্ডটা ঘটিয়েছে হ্যাম রেডিও। ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাব আর বাংলাদেশের হ্যাম রেডিওর কর্মীরা ৪০ বছর পর প্রায় হারিয়ে যাওয়া মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়েছে এক স্বাস্থ্যকর্মী মেয়ের।
ঘটনাটি কি?
ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীষ নাগ বিশ্বাস জানান,’ হাওড়ার জয়সওয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সুতপা রায় আমাকে ফোন করে জানান, ওঁর সহযোগী একজন স্বাস্থ্যকর্মী মায়া চক্রবর্তী বহু বছর আগে বাংলাদেশ দেশ থেকে এই বাংলায় চলে আসেন। তখন ওঁর মাত্র ১৩ বছর বয়েস। বিয়ে হয়ে এখানে চলে আসেন। মাদার্সডের দিন খুব মন খারাপ করছিলেন মায়ের জন্য। বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কোন জবাব আসেনি। কিছু করা যায় কিনা?
আরও পড়ুন: ‘মোদির পাশে আছি’, ভারতকে ভেন্টিলেটর দেওয়ার ঘোষণা ট্রাম্পের
একটু থেমে অম্বরীষ বলেন, ‘ আমরা বাংলাদেশের হ্যাম রেডিও বন্ধু শামসুল আলম তুহিন, শামসুল হুদা, অনুপ কুমার ভৌমিকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। বছর ৫৬ র মায়া দেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তিনি শুধু কালিগঙ্গা নদির নাম বলতে পারেন। ২০০ কিলোমিটার ব্যপ্ত কালিগঙ্গা নদির তীরবর্তী প্রত্যেক গ্রামে খোঁজ চালিয়ে অবশেষে মায়া দেবীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। ওঁদের এখনকার বাড়ি নোনাডাঙা গ্রামে। কিন্তু এই সময় ওঁর মা ছিলেন ফরিদপুরে মায়া দেবীর ভাইয়ের বাড়িতে। শেষ পর্যন্ত গত বৃহস্পতিবার রাতে মায়ের সঙ্গে দীর্ঘ ৪০ বছর পর কথা বলেন মায়া দেবী। একটু ভুল হল, কথা বললেন কম, কাঁদলেন বেশি। অনেক দিনের অনাবৃষ্টির পর যেন শাওন এলো চরাচর জুড়ে।