
যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের সঙ্কটজনক আর্থিক পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মচারীদের জন্য এক দুশ্চিন্তার বার্তা বয়ে আনলো কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারি কর্মী মহলে অবশ্য করোনা মহামারী শুরুর আগেই এই বিষয়ে নানান গুঞ্জন শোনা গেছিল। তবে স্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি তখন। তবে এবার এ বিষয়ে কড়া নির্দেশ জারি করেছে সরকারি কর্মী বিষয়ক মন্ত্রালয়। ৩০ বছর চাকরি করা বা ৫০-৫৫ বছর বয়স হয়ে যাওয়া দুর্নীতিগ্রস্ত বা অদক্ষ কর্মচারীদের আগাম অবসরে পাঠাবে কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্রের এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ফান্ডামেন্টাল রুলের ৫৬ (জে), ৫৬ (এল) এবং ১৯৭২-এর সেন্ট্রাল সিভিল সার্ভিসের (পেনশন) ৪৮ (১) (বি) ধারা অনুযায়ী উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের হাতে জনস্বার্থে কোনও সরকারি কর্মীকে আগাম অবসর দেওয়ার একচ্ছত্র ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে এটা বাধ্যতামূলক অবসরের মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয়। এই ব্যবস্থায় কর্মজীবনের ৩০ বছর পূর্ণ হলে বা কর্মীর ৫০-৫৫ বছর বয়স হলে সরকার জনস্বার্থে তাঁকে আগাম অবসর দিতে পারে।
১৯৭২ সালের সেন্ট্রাল সিভিল সার্ভিসেস (পেনশন) নিয়মাবলীর অন্তর্ভুক্ত রুল ৪৮ (১) (বি) এবং মৌলিক নিয়মাবলী ৫৬ (জে) ও ৫৬ (আই) অনুযায়ী কোনও কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মীর পারফর্ম্যান্স রিভিউ করা হয়। সেক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী ওই কর্মীর পারফরমেন্স খারাপ হলে ওই কর্মীকে যে কোনও সময় অবসর গ্রহণে বাধ্য করতে পারে সরকার। তবে এক্ষেত্রে কোনও কর্মীকে ছাঁটাই করার আগে সেই কর্মীকে তিন মাস আগে নোটিশ দিতে হবে অথবা ওই কর্মীকে তিনমাসের বেতন দিয়ে তবেই ছাঁটাই করতে হবে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মী অবসরগ্রহণের পরে পেনশন পাবেন। ইতিমধ্যেই কর্মীদের পারফরমেন্স রিভিউ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। রিভিউ করার জন্য ইতিমধ্যেই বিশেষ রিভিউ কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
আরও পড়ুন: সিটিজেন মুখার্জি চিরঘুমের দেশে, রইল তাঁর রাজনৈতিক আদর্শে আকীর্ণ পথ
এবার এই আইন মোতাবেক সরকার বেশ কিছু কর্মচারীদের অবসর গ্রহণের পথে হাঁটতে বাধ্য করবে তা স্পষ্টই অনুমান করা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ঐ নির্দেশিকায় পরিষ্কার বলা হয়েছে, কোনও সরকারি কর্মীর বয়স ৫৫ বছর হয়ে গিয়ে থাকলে এবং চাকরি জীবনের ৩০ বছর পূর্ণ হলে জনস্বার্থে প্রয়োজনে তাঁকে মেয়াদ ফুরানোর আগেই সরকার অবসর নিতে নির্দেশ দিতে পারে। সে ক্ষেত্রেও তিন মাসের নোটিশ, বেতন-ভাতা এবং অবসরকালীন পেনশন চালু করতে হবে। প্রতিটি দপ্তরকেই সে জন্য রেজিস্টার তৈরি করতে বলা হয়েছে। প্রতি ত্রৈমাসিকের শুরুতে তা খতিয়ে দেখবেন দপ্তরের সিনিয়র আধিকারিক। দেখতে হবে, সংশ্লিষ্ট পদে কাজ করার দক্ষতা কর্মীর আছে কি না, তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে কি না। দেখতে হবে তাঁর কর্মজীবনের সার্ভিস রেকর্ড, অ্যানুয়াল পারফরম্যান্স অ্যাপ্রাইজাল রিপোর্ট (APR)। সংশ্লিষ্ট কর্মীর ফাইল ও রিপোর্টও পরীক্ষা করে দেখা হতে পারে।