স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভ্যানচালককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ, আটক অভিযুক্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা,কাটোয়া: বাড়ির বারান্দায় শুয়ে বিশ্রাম নেওয়ার অপরাধে এক ভ্যানচালককে লোহার রড দিয়ে বেধরক মারধরের অভিযোগ উঠল কাটোয়া শহরের বাসিন্দা এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে । পরে প্রহৃতের মৃত্যু হলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে পিটিয়ে মারার অভিযোগ তুলেছেন মেঘনাদ পন্ডিত(৪৮) নামে মৃত ভ্যানচালকের স্ত্রী । এই ঘটনায় কাটোয়া শহরের মাধবীতলার বাসিন্দা অভিযুক্ত শিক্ষক অমিত মল্লিককে মঙ্গলবার আটক করেছে পুলিশ ।
যদিও এদিন বিকেল পর্যন্ত এনিয়ে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে জানা গেছে । মৃতদেহটি এদিন ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, কাটোয়া শহরের মাধবীতলা এলাকায় বসবাস করতেন মৃত ভ্যানচালক মেঘনাদ পন্ডিত । অন্যদিকে একই এলাকার বাসিন্দা অভিযুক্ত অমিত মল্লিক বীরভুম জেলার লাভপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গনিত বিষয়ের শিক্ষক । মাধবীতলায় দু’তলা বাড়ি রয়েছে অমিতবাবুদের । নিচের তলায় অমিতবাবুর বাবা তাপস মল্লিকের হার্ডওয়ার সামগ্রীর ব্যাবসা রয়েছে । ঘটনাটি ঘটে গত রবিবার ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,ওই দিন দুপুরে ভ্যান চালিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়লে তাপসবাবুর দোকানের সামনে রাস্তার পাশে ভ্যানটি রেখে দোকানের বারান্দায় শুয়ে জিরিয়ে নিচ্ছেলেন মেঘনাথ পন্ডিত । এই দেখে অমিত মল্লিক এসে মেঘনাদবাবুকে উঠে যেতে বলেন । কিন্তু ক্লান্ত মেঘনাদবাবু উঠে যেতে বিলম্ব করায় দু’জনের মধ্যে এনিয়ে বচসা শুরু হয়ে যায় । কিন্তু বচসার মাঝে অমিত তাঁদের দোকান থেকে একটি লোহার রড নিয়ে এসে মেঘনাদকে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করে দেন বলে অভিযোগ । শেষে মেঘনাথের আর্ত চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে আসে । তারপর মেঘনাথকে তাঁরা গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় ।
নিহতের স্ত্রী কৃষ্ণা পণ্ডিতের কথায়, “আমার স্বামী গুরুতর জখম হলেও ঘন্টাখানেক চিকিৎসা করার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় । কিন্তু আমার স্বামীকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি আনার পরেই ওনার পেট ফুলে যায় । সঙ্গে রক্ত বমি শুরু হয়। তখন ফের হাসপাতালে ভর্তি করি । কিন্তু আমার স্বামী সোমবার গভীর রাতে মারা যান।” কৃষ্ণাদেবীর অভিযোগ, ওই শিক্ষকের মারধরের ফলেই তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে৷ যদিও অভিযোগ প্রসঙ্গে শিক্ষকের পরিবারের তরফে কোনও মতামত পাওয়া যায়নি ।
জানা গেছে,ভ্যানচালকের মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ এদিন বেশ কিছু লোকজন গিয়ে অমিত মল্লিকের বাড়ি ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে দেয় । শেষে খবর পেয়ে পুলিশ এসে অমিত মল্লিক নামে ওই শিক্ষককে আটক করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে ।