সন্তান না হওয়ায় গৃহবধূকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ

শ্যাম বিশ্বাস, উওর ২৪ পরগনা: সন্তান না হওয়ায় এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠলো শ্বশুরবাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট মহাকুমার হাসনাবাদ থানার রামেশ্বরপুর গ্রামে। জানাগেছে, গত তিন বছর আগে বসিরহাটের শাকচুড়া দাশপাড়ার রিয়া দাস এর সঙ্গে হাসনাবাদ রামেশ্বরপুর গ্রামের দেবব্রত দাসের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে হয়। এই বিয়েতে রাজি ছিল না টিয়ার বাবা-মা। তা সত্ত্বেও ভালোবাসার বিয়েকে স্বীকৃতি দিতে বাপের বাড়ির পরিবার পরে বিয়ে মেনে নেয়।
বিয়ের ছমাস পর থেকে টিয়ার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত স্বামী দেবব্রত। বারবার টাকার জন্য চাপ দিত টিয়ার ওপরে। একদিকে পণের দাবি অন্যদিকে বাপের বাড়িতে আসা নিষেধ ।এই নিয়ে একাধিকবার টিয়ার সঙ্গে তার স্বামীর দেবব্রত দাস, শাশুড়ি বাতাসি দাস, শশুর সঞ্জয় দাস এর সঙ্গে বচসা গন্ডগোল শুরু হয়। কিন্তু একের পর এক অত্যাচারের সীমা বেড়ে যায়। গত ছ’মাস আগে টিয়ার মাথায় হাতুড়ির বাড়ি মারার অভিযোগ ওঠে শশুর শাশুড়ি ও স্বামীর বিরুদ্ধে। সেইসময় সমস্যা মিটে গেলেও একাধিকবার তার সন্তান না হওয়ার জন্য অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ মৃত বধূর মা সুমিত্রা দাসের।
এরপর শনিবার সন্ধ্যাবেলায় টিয়া বাপের বাড়িতে আসার জন্য তার স্বামীকে বললে তারা আসতে দিতে নারাজ। এমনকি বারবার সন্তানের দাবি করে টিয়ার কোন সন্তান না হওয়ার জন্য প্রায় সময় অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করত। প্রতিবাদ করলে টিয়ার স্বামী তার হাত-পা ধরে রাখে আর টিয়ার শ্বশুর-শাশুড়ি কেরোসিন তেল দিয়ে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেয়ার অভিযোগ করে বধূর বাপের বাড়ির লোকজন। ওই বধূ কে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় গ্রামবাসীরা উদ্ধার করে প্রথমে বসিরহাট জেলা হাসপাতাল, তারপর কলকাতা আরজিকরে নিয়ে গেলে আজ দুপুর বেলায় ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার জেরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনায় মৃত বধূর বাপের বাড়ি লোকজন হাসনাবাদ থানায় শ্বশুর-শাশুড়ি স্বামী মামি শাশুড়ি ও মামা বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। ইতিমধ্যে হাসনাবাদ থানার পুলিশ শশুর শাশুড়ি ও স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে। আগামীকাল সোমবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হবে। মৃত বধূর মা সুমিতা দাস, বাবা সুকুমার দাস গ্রামবাসীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।