১০০ দিনের কাজের দুর্নীতির অভিযোগ তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে

মিল্টন পাল, মালদা: তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ না করে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ প্রধানের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার চাঁচল ১নম্বর ব্লকের খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতে। মাস্টার রোলে নাম থাকা সত্ত্বেও অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি টাকা।সেই টাকা আত্মসাৎ করেছে পঞ্চায়েতের প্রধান, নির্মাণ সহায়ক, জিআরএস সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। চাঁচোল ১ নম্বর ব্লকের বিডিও ও জেলা শাসকের কাছে অভিযোগ করেছে গ্রামবাসীরা। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বিরোধীদের চক্রান্ত দাবি করেছে প্রধান।
মালদার চাঁচোল মহকুমায় অবস্থিত খরবা গ্রাম পঞ্চায়েত। অভিযোগ এই এলাকায় হার্টিকালচার স্কিমে ১০০ দিনের কাজ করানো হয়। কিন্তু মাস্টার রোলের নাম থাকা সত্ত্বেও গ্রামবাসীদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি। অথচ কাগজে-কলমে দেখা যাচ্ছে টাকা পেমেন্ট হয়ে গেছে। গ্রামবাসী থেকে বিরোধী দলের অভিযোগ সেই টাকা আত্মসাৎ করেছে। ভুয়া বিল করে গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান পারভিনা খাতুন, নির্মাণ সহায়ক অভিমুন্য দাস, জিআরএস সানাউল্লাহ সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। তারা জবাব চাইতে গেলে তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করা হয়। গ্রামের বাসিন্দা আনারুল হক বলেন, আমার নামে পোল্ট্রি ফার্ম বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু আমি পোল্ট্রি ফার্মের ব্যাপারে কিছু জানিনা। এমনকি পোল্ট্রি ফার্মের কোনও কিছুই পাইনি।
পরবর্তীতে এখানকার মেম্বার আমাকে বলছে তুমি কি পোল্ট্রি ফার্মের টাকা পেয়েছ।তখন আমি জানায় আমি কোন পোল্ট্রি ফার্মের টাকা পাইনি। এমনকি আমি কোনদিন কোথাও মাটি কাটতে যায়নি গোপালপুর দুর্গাপুর সহ বিভিন্ন জায়গায়।অথচ দেখছি ওই তিন চার জায়গায় ১০০ দিনের কাজের টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। পরে হয়তো সেই টাকা একাউন্টে ঢুকে যাবে কিন্তু একাউন্ট চেক করে দেখি সেই টাকা ঢোকেনি।আমার একাউন্টে কোন টাকা নেই অথচ টাকা তোলা হয়ে গিয়েছে। এই টাকা খরবা পঞ্চায়েতের প্রধান তুলে নিয়েছে। কেন প্রধান এ ধরনের ঘটনা ঘটলো আমার তার জবাব চাই।
খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের মুরতুজ আলম বলেন,মাস্টার রোল হয়ে গেছে। অথচ আমরা কোনো কাজ করিনি। অথচ মাস্টাররোল টাকা কি করে করলো।ঘটনা জানতে পেরে আমি প্রধানের কাছে যায় এবং জানতে চাই এরা কোন দিন পোল্ট্রি ফার্ম করেনি ১০০ দিনের কাজ করে নি অথচ এদের টাকা কোথায় গেল। তখন সে জানাচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েতের সেক্রেটারি ও এন এস এর কাছে যেতে বলছেন। সরকারি আধিকারিকরা এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে আমার মনে হয়। এর আগেও গাছ না লাগিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আমরা বিডিও এস ডিওর কাছে অভিযোগ করেছি। গ্রামবাসীদের সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করে নিয়েছে এই অভিযুক্তরা। অবিলম্বে ঘটনা তদন্ত করতে হবে।
গোটা ঘটনা নিয়ে জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,খরবা এলাকাতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে এই দুর্নীতি শুধু সেই এলাকায় নয়,গোটা মালদা জেলা জুড়ে সরকারের তৃণমূলের যারা প্রধান রয়েছেন তারা ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন। সর্বোপরি সরকারি আধিকারিক যারা তারা এই দুর্নীতির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত রয়েছে। এবং জনপ্রতিনিধিদের মাথার ওপর একটা প্রচ্ছন্ন হাত আছে। সেই জন্য সাধারণ মানুষের টাকা নিয়ে জনপ্রতিনিধিরা দুর্নীতি করছেন।গোটা জেলা জুড়ে শাসক দল পঞ্চায়েতের মাধ্যমে টাকার লুটপাট চালাচ্ছে। খরবাতেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন এই দুর্নীতির সঠিক ব্যবস্থা না করলে সেই এলাকার মানুষকে নিয়ে বিজেপি আন্দোলনে নামবে। তৃণমূলের মালদা জেলার মুখপাত্র শুভময় বসু বলেন,কোনো ধরনের দুর্নীতি বরদাস্ত করবে না। যে সব আধিকারিকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তার তদন্ত প্রশাসন করবে। যদি দোষী প্রমাণিত হয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। প্রধানের বিরুদ্ধে পৃথক ভাবে দলীয় তদন্ত করা হবে। সেখানে যদি তিনি দোষী প্রমাণিত হন তাহলে দল যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেবে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পঞ্চায়েতের প্রধান বলেন এটা বিরোধীদের চক্রান্ত। মিথ্যা অভিযোগ।