আমফানের ক্ষতিপূরণ মেলেনি, ঋণগ্রস্ত নন্দীগ্রামের বিদ্যালয়

রাজকুমার আচার্য, নন্দীগ্রাম (পূর্ব মেদিনীপুর): আমফান ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল নন্দীগ্রামে বিদ্যালয়গুলিও। কয়েক মাস কেটে গেলে তবু মেলেনি সরকারি সাহায্য। বর্ষার হাত থেকে বিল্ডিং বাঁচাতে মেরামতের কাজ করে ঋণে করেছেন অনেক বিদ্যালয়। কীভাবে ঋণ পরিশোধ হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কর্তৃপক্ষ।
আমফানের পর সরাসরি তরফে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব চাওয়া হয়েছিল। সেইমতো হলদি নদী তীরবর্তী ব্লক নন্দীগ্রাম ১, হলদিয়া, সুতাহাটা ব্লকের বিদ্যালয়গুলি ক্ষতিপূরণের টাকা পেলেও নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের কোনও বিদ্যালয় ক্ষতিপূরণ পায়নি বলে অভিযোগ। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লক লাগুয়া নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের ১০৮ বছরের প্রাচীন সুবৃহৎ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় আশদতলা বিনোদ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক আনন্দময় দে বলেন, “সরকারি তরফে বারবার তাগাদা দেওয়া হয়েছিল যেন আমরা দ্রুত ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পাঠাই। সেইমতো দ্রুত আমরা হিসেব পাঠিয়ে ছিলাম। আমাদের বিদ্যালয়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সেন্টার ছিল। তখনও কয়েকটি পরীক্ষা বাকি । ব্লকের মধ্যে আমাদের বিদ্যালয়ে সবচেয়ে বেশি প্রায় ২৫-৩০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখনও কোনও সরকারি সাহায্য পাইনি। স্কুল বিল্ডিং বাঁচাতে বাধ্য হয়ে ঋণ করে মেরামতের কাজ হয়েছে। এখনও অনেক কাজ বাকি। সরকারি সাহায্য না পেলে আমরা বাকি কাজ এবং ঋণ কীভাবে শোধ করব তা নিয়ে চিন্তিত।”
তিনি আরও বলেন, “পুনরায় সরকারি বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করলে তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।”নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের প্রায় ৭৫ বছরের প্রাচীন খোদামবাড়ি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শৈবাল জানা বলেন, “এখনও কোনও সরকারি সাহায্য পাইনি। টিনের চাল উড়ে যাওয়ায় বর্ষার জলে প্রাচীন ছাদ ও দেওয়ালের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বাধ্য হয়ে স্কুল ফাণ্ডের সামান্য অর্থ নিয়ে কাজ শুরু করবো ভাবছি। কতটা মেরামত করা যাবে তা এখনি বলতে পারছি না। তবে সরকারি সাহায্য পাওয়ার আমি আশাবাদী। প্রতীক্ষায় আছি।”
নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের বয়াল ২ নম্বর ব্লকের উপ প্রধান সুকেশকুমার প্রামাণিক বলেন,”কী কারণে ২ নম্বর ব্লকের কোনও বিদ্যালয় ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না তা আমার অজানা। আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আশদতলা বিনোদ বিদ্যাপীঠ ছাড়াও ব্লকের একাধিক বিদ্যালয়ের প্রচুর পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। মেরামতের কাজ করতে গিয়ে বিদ্যালয়কে ঋণ করতে হয়েছে। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের বিদ্যালয়গুলি ক্ষতিপূরণ পেয়েছে কিন্তু ২ নম্বর ব্লকের বিদ্যালয়গুলি কোনও সাহায্য পায়নি। প্রশাসনিক স্তরে আবারও যোগাযোগ করবো।”