কলকাতাগুরুত্বপূর্ণপশ্চিমবঙ্গহেডলাইন
প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে অমিত শাহ ও মমতা, অভিযোগ অধীরের
আদিবাসী বাড়িতে খেতে এতো টাকা খরচের প্রয়োজন নেই, মনে করেন সুজন

ফিরোজ আহমেদ, কলকাতা: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর জঙ্গলমহল সফর এবং আদিবাসীর বাড়িতে মধ্যাহ্ণভোজের ঘটনাকে বিধল বাম ও কংগ্রেস। সেইসঙ্গে রাজ্যের শাসকদলকেও একের পর এক তোপ দাগল জোট শিবিরের নেতারা। রাজ্যের সাম্প্রদায়িক ও জাতাপাতের রাজনীতির জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্যের শাসকদলকে আসামীর কাঠগড়ায় দঁাড় করালেন প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরি ও বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। তবে রাজ্যের মানুষ সম্প্রদায়ুক ও জাতপাতের রাজনীতির জন্য এই দুই দলকে ক্ষমা করবে না বলে দাবি জোট নেতাদের।
বৃহস্পতিবার জঙ্গলমহলে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি করেন। সেইসঙ্গে দুপুরে আদিবাসী এক পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাস্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ঠিক তখনই দলিত উত্পীড়ন ইস্যুতে বিধানভবনের সামনে ‘অবস্থান সত্যাগ্রহ’-এ সামিল হয় কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেই সত্যাগ্রহ-এর মঞ্চ থেকে দুই ফুল শিবিরকে নিশানা করে একের পর এক তোপ দাগেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। চাঁছাছোলা ভাষায় বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে। অধীর চৌধুরী তোপ দাগেন, “অমিত শাহ সাম্প্রদায়িক ও জাতপাতের রাজনীতি করতে এসেছেন। আজ যখন দেশজুড়ে আদিবাসীরা লাঞ্চিত, বঞ্চিত, খেতে পাচ্ছে না, তখন অমিত শাহ রাজৈনিক চমক দিতে আদিবাসী বাড়িতে খেতে গিয়েছেন। এটা সাম্প্রদায়িক বিজেপির চমক। বাংলার মানুষ সেটা জানে। অমিত শাহ দলিতদের ফুসলাতে এসেছেন। রাজনৈতিক স্টান্ট দিতে এসেছেন।”
সবটাই লোক দেখানো রাজনীতি। কারণ ভোট চলে এসেছে। ভোটের সময় সবাই আসে, বড় বড় কথা বলে। তারপর ভুলে যায় বলে সমালোচনায় মুখর হন কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা অধীর চৌধুরি। পাশাপাশি রাজ্যের শাসকদলের সমালোচনা করে অধীরের অভিযোগ, বিজেপির সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে তৃণণূল সাম্প্রদায়িক ও জাতপাতের রাজনীতি করছে। ফলে সুবিধা হচ্ছে বিজেপি। তঁার কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমাণ করতে মরিয়া তিনি বিজেপির থেকে বড় হিন্দু।” বিজেপি ও তৃণমূল রাজে্য প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি করছেন বলে দাবি তাঁর। উত্তর ভারতের রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৃণমূল এরাজে্য আমদানি করেছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করেন তিনি। রাজ্য সরকারের উদ্দেশে তাঁর চ্যালেঞ্জ, হিম্মত থাকলে মুখ্যমন্ত্রী জবাব দিন। বাংলায় তফশিলি জাতি-উপজাতিদের জন্য কতগুলো শূন্যপদ আছে? তা প্রকাশ করুক রাজ্য সরকার। রাজে্য বাম-কংগ্রেস জোট আরও মজবুত হবে। মানুষের জন্য রাজনীতি করি বলে দাবি অধীরের।
অধীর যেখানে শেষ করেন ঠিক সেখান থেকে অভিযোগের ঝুলি নিয়ে হাজির হন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। তঁার দাবি, এবার ভোটে তৃণমূল হারবে তা নিশ্চত হয়ে গিয়েছে। তারদন্য অমিত শাহদের কিছু করতে হবে না। মানুষ জানে বড় ঘাষ কাটলে পেছন পেছন গরু বেড়া ভেঙে ঢুকবে। তাই তৃণমূল ও বিজেপিকে হারাতে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। বাম ও কংগ্রেসের জোটের শক্তি প্রদিতিদিনই বাড়ছে। অমিত শাহকে সুজনের খোঁচা, “আদিবাসী বাড়িতে খাওয়ার জন্য লক্ষ-কোটি টাকা খরচ করতে হয়না। হেলিকপ্টার বা প্লেনে করতে আসতে হয়না। তাঁদের পাশে থাৈকলে প্রতিদিনই খাওয়া যায়।” ভোটের রাজনীতি করতে অমিত শাহ জাতপাতের রাজনীতি করছেন বলে অভিযোগ বাম পরিষদীয় দলনেতার। তঁার দাবি, অমিত শাহ যদি সতি্য আদিবাসী দরদী হন তাহলে সেই পরিবারের সঙ্গে রাত্রিযাপন করুন। তা না করে তিনি পঁাচতারা হোটেলে থাকবেন। পুরোটাই নাটক বলে অভিযোগ সুজনের।