
শরণানন্দ দাস, কলকাতা: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের আরও একটা পার্বণ কেটে গেলো ঘরবন্দি থেকে। রাখিবন্ধন উৎসব কেটে গেল একরকম উচ্ছ্বাসহীন ভাবেই। কিন্তু বাঙালির প্রাণের উৎসব দুর্গাপূজায় কী হবে? তখনও কি করোনাসুরের দাপট এমনই থাকবে? উত্তরটা সত্যি কারও জানা নেই। কিন্তু তাই বলে প্রস্তুতি থেমে নেই। আর কলকাতার দুর্গাপুজো মানেই থিমের পুজো। এই করোনাকালেও তার ব্যতিক্রম নেই। একটু ভুল বলা হল তিনটি পুজোর উদ্যোক্তা পড়শিই বলা চলে যৌথভাবে থিম হিসাবে তুলে ধরছে ‘অপু ট্রিলজি’। শহরে এই প্রথমবার এমন অভিনব উদ্যোগ। এঁরা হলেন বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘ, ৬৬ পল্লী ও কালিঘাট নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিট ক্লাব।
এবার বিষয়টা খোলসা করা যাক। তিনটি ক্লাবই পাশাপাশি। এবারে দর্শনার্থীরা ‘ ড্রাইভ ইন দর্শনের’ সুযোগ পাবেন। দুপাশে মণ্ডপসজ্জা। গাড়ি থেকে নামার দরকার নেই। মণ্ডপ আর প্রতিমা গাড়িতে বসেই দেখতে পাবেন। নিশ্চিত ভাবেই এই ভাবনাটাও অভিনব। এ বছর বাঙালির ‘ সাত রাজার ধন এক মানিক’ সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ। তাঁকে সম্মান জানাতেই এই তিনটি ক্লাবের বিষয় ভাবনায় অপু ট্রিলজি- পথের পাঁচালী, অপুর সংসার, অপরাজিত। বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘের থিম পথের পাঁচালী,নেপথ্য শিল্পী স্নেহাশিস মাইতি, নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিট ক্লাবের থিম অপুর সংসার, ক্লাবের সভ্যরাই ফুটিয়ে তুলবেন সৌমিত্র, শর্মিলা ঠাকুরের অনবদ্য চরিত্রায়ণের খণ্ডঢিত্র। আর ৬৬ পল্লীর বিষয় ভাবনায় ‘অপরাজিত’ , ফুটিয়ে তুলবেন ঈশিকা চন্দ্র ও দীপ দাস। সামগ্রিকভাবে এই উদ্যোগের শরিক ইন্টারন্যাশনাল সাস্টেনেবল ডেভেলপমেন্ট ও মৃদুল পাঠক।
আরও পড়ুন: রাম মন্দিরের সঙ্গে লকডাউনের কোনো সম্পর্ক নেই, অহেতুক রাজনীতি করা হচ্ছে : ফিরহাদ হাকিম
যাঁরা পায়ে হেঁটে প্রতিমা দেখবেন তাঁদের জন্য বিশেষ স্যানিটাইজেশন চ্যানেল থাকবে। মূল প্রবেশ পথে থার্মাল গান দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মাপা হবে। দূরত্ব বিধি মেনে এক একবারে কম দর্শককে ঢুকতে দেওয়া হবে মণ্ডপে। আবেগ, প্রাণঢালা উচ্ছ্বাসের সেই চেনা ছবির অপেক্ষায় বাঙালি। ঢাকের বাদ্যি আর মঙ্গলশঙ্খ জানান দেবে মা এসেছেন। ছেঁড়া মেঘের পাল আর কালের বন জানান দেবে আর ভয় নেই মা আসছেন।