দীর্ঘ ৮ মাস পরে আসানসোলে এলেন বাবুল সুপ্রিয়, ব্যারাকপুরে দলীয় নেতা খুনে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুললেন বিজেপি সাংসদ

শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোল: করোনা আবহের জন্য দিল্লি থেকেই নিজের সংসদীয় এলাকা আসানসোলে নজর রাখছিলেন সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। কী কী করতে হবে, তারও নির্দেশ তিনি দলের নেতাদের দিচ্ছিলেন। ৮ মাসেরও বেশি সময় পরে সোমবার আসানসোলে এলেন সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। তাকে এতদিন পরে পেয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বোসিত বিজেপির নেতা, কর্মী ও সমর্থকেরা। এদিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ নয়াদিল্লি-হাওড়া এসি স্পেশাল ট্রেনে আসানসোল স্টেশনে নামেন বাবুল সুপ্রিয়।
স্টেশনে বাবুলকে স্বাগত জানান পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষণ ঘোড়ুই, রাজ্য যুব মোর্চা সাধারণ সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়। পশ্চিম বর্ধমান জেলা বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি অরিজিৎ রায়, প্রশান্ত চক্রবর্তীরা। আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা ও কর্মীরা বিভিন্ন অভিযোগ প্রায়ই করে থাকে। কখনো সাংসদের নিখোঁজ বলে প্রচার করা বা আবার কখনো হাফপ্যান্ট মন্ত্রী বলে কটাক্ষ করা শাসক দলের তরফে । এই করোনা আবহে সেইসব অভিযোগ নতুন মাত্রা পেয়েছে। এমন সংকটের সময়েও তিনি নিজের সংসদীয় এলাকা আসানসোলের মানুষের পাশে ছিলেন না বলে অভিযোগ করা হয়।
স্টেশনে সাংবাদিকেরা এদিন বাবুলকে সেইসব অভিযোগ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে সোশ্যাল ডিস্টেন্স বা সামাজিক দূরত্বর কথা বলেছেন তা মানা হচ্ছেনা বলে প্রশ্ন করেন। তার উত্তরে তিনি বলেন, আমাকে আসানসোলের সবাই ভালোবাসে। তাই এখানে এলেই ভিড় জমে যায়। এদিনও হাজারের বেশি মানুষ এসেছেন। সবাইকে বলা হয়েছে মাস্ক পড়ে থাকতে ও সোশ্যাল ডিস্টেন্সেস মেনে চলতো। পুলিশ প্রশাসনের আগে থেকেই এতো লোক আসবে তা ভেবে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, এই কারনে আসানসোলে আগে আমি আসিনি। আমি একজন দায়িত্বশীল নেতা। তাই আমাকে গলি গলি ঘুরে ভিড় জোটাই না। অন্যরা গলি গলি ঘোরে।
ব্যারাকপুরে বিজেপি নেতা খুনের প্রসঙ্গে বাবুল বলেন, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা নেই এটা আমরা অনেকদিন ধরেই বলে আসছি। এখানে একমাত্র রাষ্ট্রপতি শাসন বা ৩৫৭ ধারা প্রয়োজন। তা আমরা বারবার দাবি করে আসছি। এদিন তিনি তার মহিশীলা কলোনির ফ্ল্যাটে যাননি। আসানসোলেই একটি হোটেলে আসেন। এই প্রসঙ্গে বাবুল বলেন, আমি ও আমার সঙ্গী চারজনের লালারসের পরীক্ষা করে তারপরেই আমার ফ্ল্যাটে যাবো। তারপর আমার দলীয় কর্মসূচি শুরু করবো । আপাতত হোটেলে থেকে দলের নেতাও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলবো । আর যেখানেই যাবো, সঙ্গে মাস্ক নিয়ে যাব। যদি দেখি, কারোর মাস্ক নেই তাকে তা দিয়ে মুখে পড়তে বলবো।
বাবুল সুপ্রিয়র এই কথা প্রসঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা আসানসোল পুরনিগমের মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, বাবুল সুপ্রিয় তার অংহকারের কথা বলছেন । আমরা গলি গলি ঘুরি, এটাতো ঠিক। তাতে আমাদের তাতে কোনো লজ্জা নেই। আমরা গলি গলি ঘুরে মানুষের কাছে যাই ও তাদের পাশে থাকি। বয়স্কদের পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করি। আমার তো রাজনীতিটা মাটি থেকে করে উঠে এসেছি। তিনি আরো বলেন, সাংসদের লজ্জা থাকতে পারে। তিনি অন্য ভাবে মানুষ হয়েছেন। অন্যভাবে রাজনীতিটাও করেন। তিনি যে ভাবে রাজনীতি করছেন করুন। তাতে আমাদের কিছু বলার নেই। আমার এইভাবে গলি গলি ঘুরে মানুষের পাশে থেকে রাজনীতি করে আসছি ও আগামী দিনেও করবো।