
যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: শেষ পর্যন্ত চাকরিই ছেড়ে দিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। ইস্তফাপত্রের প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন, রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি উচ্চশিক্ষা দফতরেও। মিল্লি আল আমিন কলেজের প্রাক্তন টিচার-ইন-চার্জের পদ থেকে সম্প্রতি তাঁকে বদলি করা হয়েছিল রাজা রামমোহন রায় কলেজে। বলা হয়েছিল জনস্বার্থে তাঁর এই বদলি কার্যকর করা হল। কিন্তু, নতুন কলেজে যোগ দেওয়ার বদলে চাকরি ছেড়েই দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী।
মধ্য কলকাতার মিল্লি আল আমিন কলেজে অশান্তি দীর্ঘদিনের। দু’বছর আগে শোভন চট্টোপাধ্যায় দল ছাড়ার পর তা আরও চরম আকার ধারণ করে। গত দু’বছরে শাসকদলের সঙ্গে টানাপোড়েনের জেরে কলেজে হেনস্থার মাত্রা বেড়েছে বলে অভিযোগ তুলে এসেছেন বৈশাখী। বারবার শিক্ষামন্ত্রী, উচ্চশিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের দ্বারস্থ হয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি। যার নবতম সংযোজন ফিরহাদ হাকিমের বিতর্কিত মন্তব্য। রাজ্যপালের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেন শোভন-বৈশাখী। রাজভবন থেকে বেড়িয়ে ফিরহাদের মন্তব্যের কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন তাঁরা। তাত্পর্পূর্ণভাবে, তার ঠিক পরদিনই রামমোহন কলেজে বদলির নির্দেশ আসে বিকাশ ভবন থেকে। বিজ্ঞপ্তিতে লেখা ছিল ‘জনস্বার্থে বদলি’।
নিজের ইস্তফা প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আমাকে উৎখাত করবেন বলেছিলেন। তার পরেই আমাকে মিল্লি আল আমিন কলেজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। শিক্ষক জীবনে আসল কথা হল সম্মান। যেভাবে আমাকে অপমান করা হল তারপর আর ছাত্রীদের সামনে দাঁড়ানো যায় না। সম্মান রক্ষার জন্যই আমি শিক্ষকতা ছেড়ে দিলাম।’ এখনও ২২ বছর চাকরি ছিল বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অর্থাত্ ২২ বছর আগেই তিনি অবসর নিলেন। যেই কারণে তিনি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী চাইলে চাকরি জীবনের বকেয়া টাকা নাও দিতে পারেন।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বাবুল সুপ্রিয়’র মায়ের… শোকে ভেঙে পড়লেন সাংসদ
সম্প্রতি মিল্লি আল আমিন কলেজে নানা দাবিতে ছাত্রীরা আন্দোলন শুরু করেন। সেখানে গিয়ে পুরমন্ত্রী বলেছিলেন, বৈশাখীকে সমূলে উতপাটিত কর। শোভন এবং বৈশাখী দুজনে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে ফিরহাদের বিরুদ্ধে নালিশ করেন। এরপরই সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজগুলিতে শিক্ষক বদলির তালিকায় নাম ওঠে মিল্লি আল আমিন কলেজের টিচার ইনচার্জ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁকে রামমোহন কলেজে বদলি করে দেওয়া হয়। এতেই চরম ‘অপমানিত’ হন বৈশাখী। তবে সেই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করা হয়েছে কিনা, তা এখনও জানা যায়নি। ভয় কাটানোর দাওয়াই হতে পারে দুই বাংলার কোভিড জয়ীদের কথা।