সন্ধ্যারতির পরই বাংলাদেশের পুজোমণ্ডপ বন্ধ, জানাল পূজা উদযাপন পরিষদ

যুগশঙ্খ প্রতিবেদন, ঢাকা: মহামারি করোনা সংক্রমণ রোধে ‘সন্ধ্যারতির’ পর মন্দির ও ম-প বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি। একই সঙ্গে বাড়িতে বসে টিভি চ্যানেলে সপরিবারে প্রতিমা দর্শন ও অঞ্জলি দেয়ার আর্জি জানিয়েছে তারা।
বুধবার ঢাকায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানানো হয়। মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি ‘শারদীয় দুর্গাপুজো ২০২০’ সভার আয়োজন করে।
সভায় জানানো হয়, সপ্তমীর দিনে করোনা মুক্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। এই সাত দিনে সন্ধ্যারতির পর সারা দেশের পূজা মণ্ডপগুলো বন্ধ থাকবে। দেবী দুর্গার ভোগ প্রসাদ ব্যতীত এবার খিচুড়ি বা এই জাতীয় প্রসাদ বিতরণ এবং বিজয়ার শোভাযাত্রা হবে না। তবে প্রতি মণ্ডপ থেকে নিজ নিজ বিসর্জন ঘাটে গিয়ে দেওয়া যাবে।
ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, সন্ধ্যারতি মানে হচ্ছে সন্ধ্যার পর পুরোহিত ধূপ, শঙ্খ, পাখা দিয়ে আরতি দেন। এটি সাধারণত সন্ধ্যা ৬টার দিকে দেওয়া হয়। এটি দিতে ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগে। এই সন্ধ্যারতি শুরুর পর থেকেই মন্দির বা পূজামণ্ডপে সর্বসাধারণকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। ম-পে তখন শুধু মন্দির বা মণ্ডপের কর্মীরা থাকবেন।
মতবিনিময় সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কিশোর রঞ্জন মণ্ডল।
তিনি বলেন, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির ফেসবুক পেজ থেকে দেবী দুর্গার পুষ্পাঞ্জলি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে, যাতে বাড়িতে বসে ভক্তরা অঞ্জলি দিতে পারেন। বিভিন্ন পূজামণ্ডপে প্রতিমা ও পুজো অনুষ্ঠান সরাসরি টিভি চ্যানেলগুলো দেখাবে, যাতে বাড়িতে বসে সপরিবারে প্রতিমা দর্শন করতে পারবেন ভক্তরা।
সভা থেকে মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি সরকারের কাছে ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো দুর্গাপূজায় তিন দিনের ছুটি ঘোষণা করা, দুর্গাপূজার পাঁচ দিনে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে আলোকসজ্জা করা, প্রধান সড়কগুলোতে জাতীয় পতাকা ও শারদীয় শুভেচ্ছা বাণী টানানো, পূজাম-পে ও মণ্ডপগামী সব সড়কে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ রাখা, মন্দির ও মণ্ডপমুখী সড়কগুলো মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করা, পুজোর পাঁচ দিন সুপেয় জলের ব্যবস্থা করা, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের পরিবর্তে হিন্দু ফাউন্ডেশন গঠন করা এবং জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করা।
সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, উপদেষ্টা নিমচন্দ্র ভৌমিক প্রমুখ।
সভা থেকে জানানো হয়, সারা দেশে এবার ৩০ হাজার ২১৩টি মণ্ডপে পুজো অনুষ্ঠিত হবে। আর ঢাকা মহানগরে এবার পূজাম-পের সংখ্যা ২৩২টি, গত বছর যা ছিল ২৩৮।