
অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: গরু পাচার কাণ্ডের সঙ্গে কয়লা বছর কাণ্ডের যোগসুত্র খুঁজে সোমবার অনুপ মাঝি ওরফে লালাকে পাঠিয়েছেন সিবিআই গোয়েন্দারা। কিন্তু তার আগেই শনিবার রাতে টেলি মন্ত্রকের কাছে আবেদন করা ভিত্তিতে তার এক বছরের কল ডেটা রেকর্ড বা সিডিআর হাতে পেলেন সিবিআই গোয়েন্দারা। গোয়েন্দাদের ধারণা, এই কল রেকর্ডে পুলিশ থেকে রাজনৈতিক নেতা এমনকি অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের নাম উঠে আসতে পারে। একইসঙ্গে গরু পাচারের সঙ্গে কিভাবে দশ টাকার নোটের মাধ্যমে কয়লা রিসিভারের কাছে খবর পৌঁছে দেওয়া হতো তাও জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, টেলিমন্ত্রককে আগের সপ্তাহে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেই আর্জি মঞ্জুর করে টেলিমন্ত্রক। এরপর শনিবার রাতের দিকে সেই রেকর্ড হাতে পায় সিবিআই। কোনও প্রভাবশালীদের সঙ্গে লালার কথা হত কিনা, তা এখান থেকেই স্পষ্ট হবে বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
প্রসঙ্গত, কয়লা পাচার কাণ্ডে প্রথমে তদন্তে নামে আয়কর দফতর। আর অন্যদিকে গরু পাচার কাণ্ডে তদন্তের সঙ্গে কয়লা পাচারকারী তদন্তের যোগ সূত্র খুঁজে পান সিবিআই গোয়েন্দারা। তারপরেই আয়কর দফতর তদন্ত করে যে তথ্যপ্রমাণ বা নথি পেয়েছে, সে সব জানতে চেয়ে আয়কর দফতরকে চিঠি দিয়েছিল সিবিআই। সেই ফাইল হাতে আসার পরেই গোয়েন্দারা গোটা দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করেন। কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, রানিগঞ্জ, দুর্গাপুর, আসানসোল–সহ রাজ্যের ৩০টি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। এয়ারটেল, ভোডাফোন-সহ চারটি সংস্থার নম্বর ব্যবহার করত লালা। যে যে নম্বর গুলিতে বেশি কল করা হয়েছে, সেগুলিকে বাছাই করে আগামী সপ্তাহ থেকে ওই সমস্ত ব্যক্তিদের ডাকা হতে পারে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
এছাড়াও কিভাবে গরু পাচার কাণ্ডের সঙ্গে কয়লা পাচার করা হত, তা নিয়েও এক বিশেষ তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। জানা গিয়েছে, ১০ টাকার নোটের ইউনিক সিরিয়াল নম্বরে ব্যবহার করে রিসিভারের কাছে পৌঁছে যেত কনসাইনমেন্ট।প্রত্যেকটি কনসাইনমেন্ট দেওয়ার সময় কনসাইনমেন্ট হোল্ডারের কাছে একটি ১০ টাকার নোট দিয়ে দেওয়া হত। রিসিভার অর্থাৎ যিনি সেই কনসাইনমেন্ট নেবেন, তার কাছে সেই সিরিয়াল নম্বর জানিয়ে দেওয়া হত। পাচার হওয়া কয়লা সেই হিসেবেই রিসিভারকে কয়লা ডেলিভারি করা হত। একই কায়দায় হাওয়ালা মারফত টাকাও আদান প্রদান হত বলেও জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।