মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগেই ফ্লেক্সে ছয়লাপ গোটা মেদিনীপুর, ডিসেম্বরজুড়ে টানা কর্মসূচির ঘোষণা শুভেন্দুর

তারক হরি, পশ্চিম মেদিনীপুর: আগামী ৭ ডিসেম্বর মেদিনীপুর শহরে সভা করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বহুদিন বাদে এটাই তার রাজনৈতিক সভা। এতদিন তিনি প্রশাসনিক সভাই করে এসেছেন। কয়েক দিন আগে তিনি বাঁকুড়ার সভাতে বলেছিলেন এতদিন সরকারকে বেশি সময় দিয়েছেন, ‘এবার থেকে দলকে বেশি করে সময় দেবেন তিনি। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে মেদিনীপুরের সভাকেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম জনসভা হিসাবে ধরা যেতেই পারে’।
এর মাঝে রাজনৈতিক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হলো মন্ত্রিত্ব ছেড়ে শুভেন্দু অধিকারীর বেরিয়ে আসা। যদিও শুভেন্দু অধিকারী এখনও দল ত্যাগ করেননি, ‘তবুও কোন পথে যেতে পারেন এবং গেলে তার জবাব এই সভা থেকেই দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই রাজনৈতিক দিক থেকে এই সভা অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা’।
মুখ্যমন্ত্রীর সেই সভার প্রস্তুতির মাঝেই মেদিনীপুর শহর জুড়ে লাগানো হল , ” আমরা দাদার অনুগামী” থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি সম্বলিত ফ্লেক্স “বাংলায় দাদাকে চাই” এর পাশাপাশি “মুক্তি সূর্য” আবার অধিকারীর মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়াকে গৌরবাম্বিত করতে লেখা হয়েছে “ক্ষমতার জন্য নয়, মানুষের কাজ করার জন্য আমাদের রাজনীতি” সারি সারি দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর ফ্লেক্সে ছয়লাপ মেদিনীপুর শহরের মীর বাজার এলাকার মল্লিকচক সহ শহরের একাধিক এলাকায়। যা কিনা শহরে নতুন করে অধিকারীর এই ফ্লেক্স বাঁধাকে ঘিরে শুরু হয়েছে তুমুল জল্পনা!
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সভার আগে এই ফ্লেক্স কেন? তবে কি মুখ্যমন্ত্রীর সভাকে চ্যালেঞ্জ করেই এই ফ্লেক্স ? দাদার অনুগামীদের বক্তব্য সোমবার রাসমেলা, এলাকায় রাস মেলার অনুষ্ঠানের জন্য বহু লোক সমাগম হয়ে থাকে। সেই মানুষদের শুভেচ্ছা জানাতেই এই ফ্লেক্স , যেমনটা দুর্গাপুজো, কালীপুজো বা ছটপুজোর সময় মানুষদের শুভেচ্ছা জানানো হয়, সেই উদ্দেশ্যেই এই শুভেচ্ছা বার্তা। এর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সভার কোনও সম্পর্কই নেই বলে জানিয়েছেন দাদার অনুগামীরা।
আরও পড়ুন: ‘প্যাক-আপ’ মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন মদন মিত্র
এদিকে আরও নিবিড় জনসংযোগ করতে ডিসেম্বর মাস ধরে টানা কর্মসূচি ঘোষণা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে একটি অরাজনৈতিক সভা থেকে আরও কয়েক গুচ্ছ অরাজনৈতিক সভার ঘোষণা করে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল ছাড়ুন অথবা নায় ছাড়ুন, বিজেপিতে যান অথবা নাই যান, জনগণের মধ্যে থাকছেন তিনি।
তবে বিষয়টিকে এত সরলীকরণ করতে রাজি নয় রাজনৈতিক মহল। বরং দলনেত্রী আসার আগে নতুন করে শুভেন্দু অনুগামীদের এই উদ্যোগকে ছায়াযুদ্ধ হিসেবেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।