ত্রিফলা আক্রমণে নামছে বঙ্গ বিজেপি

রক্তিম দাশ, কলকাতা: একা রামে রক্ষা নেই, সুগ্রীব দোসর! শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়ে বাংলার রাজনীতিতে ফিরতে চলেছেন বিজেপির প্রাক্তনী তথাগত রায়। কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় হুংকার দিয়ে জানিয়েও দিলেন, একুশের ফাইনাল রাউন্ডে রাজনীতির মাঠে নামার জন্য ওর্য়ার-আপ শুরু করে দিয়েছেন। বাংলা রাজনীতিতে তৃণমূল বিদায়ে এবার দিলীপ-মুকুল আর তথাগত ত্রিফলা আক্রমণের টার্গেট নিয়ে ফেলেছে গেরুয়া শিবির। এমনটাই সূত্রের খবর।
বিজেপির সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই একুশের ভোটে জেতার জন্য দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে এই আক্রমণ ভাগের দুই স্ট্রাইকার হতে চলেছেন মুকুল রায় ও তথাগত রায়। সম্প্রতি রাজ্য বিজেপির অন্দরে গোষ্টি দ্বন্ধের যে বির্তক সংবাদমাধ্যমে আলোচিত হচ্ছিল, তা যে পুরোপুরি মিথ্যে তা এই নয়া সমীকরণের স্পষ্ট হয়ে যাবে বলেও দাবি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষ বলে দিয়েছেন, দলের অভ্যন্তরে কোনও বিরোধ নেই। যা বলা হচ্ছে তা সব মনগড়া, একাংশের সংবাদমাধ্যমের মিথ্যে প্রচার।
দুজনের বক্তব্যে এটা স্পষ্ট, এই মুহুর্তে একুশের ভোটকে পাখির চোখ হিসাবে দেখছেন তাঁরা। তৃণমূল বিদায়ই বঙ্গ বিজেপির এখন ধ্যান-জ্ঞান তাঁদের তাও তাঁরা বলেছেন। করোনা আবহে বঙ্গ রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়ছে একুশকে কেন্দ্র করে। আনুষ্ঠানিক ভাবে ভোটের লড়াই শুরু না হলেও শাসক তৃণমূল থেকে বাম-কংগ্রেস নেমে পড়েছে ময়দানে। এরই মধ্যে তথাগত রায় মেঘালয়ের রাজ্যপালের মেয়াদ শেষ করে ফিরে এসেছেন। স্যোশাল মিডিয়ায় তা নিয়েও প্রচার শুরু হয়েছিল। বিজেপি বিরোধীরা বলা শুরু করে দিয়েছিলেন, এবার বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বেও ভাগ নিতে তথাগত রায়ের ফের বাংলার রাজনীতিতে আগমন ঘটছে। কিন্তু সমস্ত জল্পনায় জল ঢেলে দিয়ে, প্রথম রাতেই বিড়াল মেরে দিয়ে তথাগত বলেছেন, তিনি বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে কথা বলেই তাঁর পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করবেন। শুধু তাই নয় তিনি এও বলেছেন, বিজেপিতে পরিবারতন্ত্র চলে না। এটা একটি গণতান্ত্রিক দল। এখানে বির্তক হবে। সেটা অবশ্যই কাম্য। তার মনে এই নয়, গোষ্ঠি দ্বন্ধ বা রক্তপাত নয়। এই কথাগুলোর মধ্য দিয়ে প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ একদা আরএসের স্বয়ংসেবক তৃণমূলকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রধর্ম মীমাংসিত ইস্যু নয়
বঙ্গ বিজেপির অপর একটি সূত্র বলছে, এই মূহুর্তে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হিসাবে দিলীপ ঘোষ বাংলার সর্বত্র চষে বেড়াচ্ছেন। বিজেপিকে বাংলার রাজনীতিতে একেবারে শূণ্য থেকে তুলে নিয়ে এসে পাকা ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন সংঘ পরিবারের প্রাক্তনী দিলীপ। এর সঙ্গে কয়েক বছর হল তৃণমূল ছেড়ে যুক্ত হয়েছেন মুকুল রায়। যিনি অলক্ষে থেকে একদা তৃণমূল দলটিকে পরিচালনা করেছেন। দলকে ক্ষমতায় এনেছিলেন। এখনও বাংলার প্রতিটি বুথে তাঁর একটি করে অনুগামী আছে। তৃণমূলের বিদায় ঘণ্টা বাজাতে অবশ্যই মুকুল রায় সঙ্গে রয়েছেন। এবার যদি তাঁরা পাশে পেয়ে যান তথাগত রায়কে তাহলে গেরুয়া শিবিরের পক্ষে বাড়তি অক্সিজেন যোগাবে একুশের লড়াইকে জিততে। কারণ, তথাগতবাবু বাম আমলে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি ছিলেন। রাজ্যপাল থাকাকালিনও বঙ্গ রাজনীতি অন্দরমহলে সরাসরি না হলেও অলক্ষে তাঁর ছিল অবাধ যাতায়াত। বিভিন্ন সময়ে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব ছিলেন বাংলা সহ দেশের রাজনীতি বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ইস্যুতে। তাই দ্রুত তিনি বাংলার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে তৃণমূলের চাপ বাড়াবেন এমনটাই মনে করছে বঙ্গ বিজেপি।