fbpx
কলকাতাগুরুত্বপূর্ণপশ্চিমবঙ্গহেডলাইন

অবলুপ্তির পথে বাঙালি হিন্দুরা, সর্তক করলেন তথাগত

রক্তিম দাশ, কলকাতা: “পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি হিন্দুদের অবলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে বাংলার রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হলেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায়।যুগশঙ্খকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করলেন আরএসএসের প্রাক্তনী প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ। তাঁর কথায়, বাংলা সহ বিশ্ব জুড়ে হিন্দু বাঙালি এখন অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে।

সক্রিয় রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়ে বেশ কয়েকটি বছর ত্রিপুরা এবং মেঘালয়ের রাজ্যপালের দায়িত্বভার সামলানোর পর বাংলায় ফিরেছেন তথাগত রায়। এদিন তিনি বলেন, ‘বাঙালি হিন্দুদের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। যাঁরা বাংলায় কথা বলেন তাঁরা আজ আড়াআড়ি ভাবে বিভাজিত হিন্দু আর মুসলিমে। যদি পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ মিলিয়ে জনসংখ্যা ধরা হয় তাহলে হিন্দুর সংখ্যা ৩০ শতাংশ। অপর দিকে মুসলমানদের সংখ্যা ৭০ শতাংশ। যা হিন্দুদেরটিকে থাকার পক্ষে অনুকূল নয়। পূর্ববঙ্গে মুসলিম সংখ্যাগুরু ছিল তাই দেশভাগ। সেখান থেকে সওয়া কোটি হিন্দুরা বিতাড়িত হয়েছেন দেশভাগের ফল হিসাবে। তাঁরা প্রধানত এই বাংলায় পালিয়ে এসেছেন। তাঁদের জন্য স্থায়ী ঠিকানা গড়তেই শ্যামাপ্রসাদ বাঙালির নিজস্ব হোমল্যান্ড হিসাবে পশ্চিমবঙ্গের দাবি আদায় করেছিলেন।বাঙালি হিন্দুরা শুধু এখানে নয়, ত্রিপুরা এবং বরাক উপত্যকায় আবাসস্থল গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু আজ বরাক উপত্যকায় বাঙালি হিন্দু জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের দিকে তাকিয়ে দেখুন, দেশভাগের পর যেখানে জনসংখ্যা ছিল ৮০ শতাংশ তা আজ ৭০ শতাংশ হয়েছে। এটা কি আমরা সঙ্কট বলব না?’

আরও পড়ুন:ঝাড়খণ্ডে চলছে টানা বৃষ্টি, মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে ২৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়লো ডিভিসি

স্বাধীনতার পর বাংলা ভাগের সময় জনসংখ্যা বিনিময় হওয়াটা জরুরি ছিল বলে মনে করেন তথাগতবাবু। তিনি দাবি করে বলেন,‘ এই বিনিময় হয়নি বলেই এতো সমস্যা। যে প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে হিন্দু বিতাড়ণ হয়েছে। সেই একই প্রক্রিয়া এখানে শুরু হতে পারে। আর তা হলে বাঙালি হিন্দুরা যাবে কোথায়? কাশ্মীরে হিন্দু পণ্ডিত বিতাড়ণের পর থেকে জেহাদি কার্যকলাপ বেড়ে গেল। উপত্যকার জনবিন্যাসের পরিবর্তন ঘটানো হল। হিন্দুরা কমে গেলেই সেখানে জেহাদিদের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়। এটা আমার অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে নেওয়া যুক্তি সঙ্গত সিদ্ধান্ত।’

বাংলাদেশ থেকে এত শরণার্থীরা পশ্চিমবঙ্গে চলে এলেও, কেন হিন্দু জনসংখ্যা বাড়ল না এই প্রশ্ন তুলে তথাগতবাবু বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দুদের জনসংখ্যার অনুপাত কমছে। ১৯৪৭ সালে যা ছিল ২৯ শতাংশ আজ তা ৮ শতাংশ। এদের বেশিরভাগ অংশই পশ্চিমবঙ্গে চলে আসলেও হিন্দু অনুপাত বাড়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। এর কারণ, বিপুল অনুপ্রবেশ এবং প্রজনন। ভোটের স্বার্থে অনুপবেশকে উৎসাহিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ হওয়ার পর থেকে এই অনুপ্রবেশ বেড়েছে। তার কারণ বাংলাদেশে জনঘনত্ব ভারতের থেকে তিনগুণ বেশি। তাঁরা এই চাপ সামলাতে পারছে না। তাঁর ওপর এখন নতুন করে যুক্ত হয়েছে রোহিঙ্গা সমস্যা। রোহিঙ্গারাও দলে দলে চলে আসছে এপারে। এভাবে চলতে থাকলে আর ৪০-৫০ বছর পরে জাতি হিসাবে বাঙালি হিন্দুর আর কোনও অস্তিত্বই থাকবে না। একথাগুলোই আমি বার বার বলছি।’

আরও পড়ুন:ফের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল অসম, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৩.৪

পশ্চিমবঙ্গে বাঙালি হিন্দুরা এখন কিছুটা সচেতন হচ্ছেন বলে মনে করেন তথাগতবাবু। তিনি বলেন, ‘বাঙালি হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষা সরকারিভাবে বা প্রশাসন দিয়ে সম্ভব নয়, যতক্ষণ না তাঁদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হবে। এটাই দুটো লাভ আছে। এক পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের অধিকারকে সংহত করা যাবে। দুইয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশেও হিন্দুরা মনোবল ফিরে পাবেন। তাঁরাও ভালো থাকবেন। একটা পালটা চাপের রাজনীতিও তৈরি হবে।’

Related Articles

Back to top button
Close