
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কমিউনিস্ট তথা সিপিএমকে বাংলার মানুষ কোনদিন ক্ষমা করবে না। তোপ দাগলেন অল ইন্ডিয়া লিগাল এইড ফোরাম-এর সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার এক সক্ষাৎকারে কমিউনিস্টদের সিপিআইএমের মুখ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে একহাত নিলেন। তিনি বলেন, ‘দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে বেড়ে ওঠা শিল্পগুলির সঙ্গে যুক্ত রুজি-রোজগার মামলা করে বন্ধ করে দিলেন কমিউনিস্ট নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। সেই সঙ্গে ছন্দহীন হয়ে গেল এবারের বাঙালির ঐতিহ্য দুর্গাপুজো। এর জন্যই বাঙালি কখনও ক্ষমা করবেনা কমিউনিস্টদের।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ক্ষতি হল দুর্গাপুজোর সঙ্গে যুক্ত কয়েকলক্ষ মানুষের। যারা প্রতিবছর এ সময় ছোটখাট ব্যবসার মধ্যে দিয়ে উপার্জন করে থাকেন। লকডাউন কোরোনা ও আমফানের তৃফোলয় বিদ্ধ আম জনতার একটা বড় অংশের মানুষ দুর্গা পুজোর সময় নানা ভাবে উপার্যন করেন। কেউ চট শিল্প, দড়ি, ঢাক, আলো, খাবারের দোকান বা মেলা ক্ষতি গ্রস্ত হল সবাই।’
সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট পুজো বন্ধ সংক্রান্ত মামলায় রায় দিতে গিয়ে জানিয়েছে রাজ্যের প্রতিটি পুজো মণ্ডপ কোয়ারেন্টাইন জোন হিসেবে গণ্য হবে। এই রায় সামনে আসার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া উঠে এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অনেকেই রায়কে স্বাগত জানালেও বিপরীত মতও উঠে আসছে। অনেকেই মনে করছেন এতে বাঙালির শ্রেষ্ঠ শারদ উৎসব ধাক্কা খেলো। শারদ উৎসব শুধুমাত্র বাঙালি আবেগের সঙ্গেই জড়িত এমনটা নয়, বাংলার বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকার লগ্নি জড়িয়ে রয়েছে এর সঙ্গে। লকডাউন পর্ব শেষে, আনলক পর্ব শুরু হতেই ধীরে ধীরে জনজীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে। দেশজুড়ে শুরু হয়েছে নতুন করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
বাংলার প্রান্তিক এলাকার মানুষও ধীরে ধীরে কর্ম জীবনে ফিরতে চাইছে। প্রান্তিক মানুষগুলি এই উৎসবের কয়েকটা দিন বাড়তি রোজগারের আশায় থাকেন। শারদ উৎসব শুরু হওয়ায় কিছুটা আশার আলো দেখতে পেয়েছিল পিছিয়ে পড়া অংশের মানুষ। সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট অ্যাডভোকেট জয়দীপ মুখার্জি কলকাতা হাইকোর্টের রায় প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য না করলেও তিনি সেক্ষেত্রে মামলাকারী সৌরভ বসু এবং মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বামপন্থীরা বিশেষত সিপিআইএম চিরদিনই বাংলার মানুষের ভাবাবেগ এবং স্বাধীন ধর্মাচরণে বাধা সৃষ্টি করেছে। তবে এই মামলার প্রভাব পড়তে চলেছে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে। সেক্ষেত্রে বিকাশ বাবুর দল অনেকটাই লড়াইয়ের ময়দানে ব্যাকফুটে চলে যাবে।’