দুষ্কৃতীদের দিয়ে ভাঙচুরে আর্থিক মদতের অভিযোগ, বিশ্বভারতী তদন্তে এবার ED
অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: শান্তিনিকেতন কান্ডে নয়া মোড়! বিশ্বভারতী প্রাঙ্গনে প্রাচীর নির্মাণ ঘিরে যে পরিমাণ অশান্তি হয়েছে, তা ইতিমধ্যেই রাজ্য ছাড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্তরে শোরগোল ফেলেছে। ওই ঘটনার দিন ক্যাম্পাসে সীমানা, প্রাচীর, গেট ভাঙচুর চালিয়েছিল যেই সমস্ত অনুপ্রবেশকারীরা তাদেরকে আদৌ কেউ এসবের জন্য ‘ফান্ডিং’ অর্থাৎ আর্থিক মদত দেওয়া হয়েছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখতে এবার তদন্তে নামল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ইতিমধ্যেই বীরভূমের পুলিশ সুপারের কাছে এই মামলার এফআইআর কপি ও অন্য তদন্তের স্বার্থে উপযুক্ত অন্যান্য নথি চেয়ে চিঠি দিয়েছে এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। ওই ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউরির যুক্ত থাকার ঘটনায় রাজনৈতিক মহলেও রয়েছে উত্তেজনা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর তরফে তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউড়ি,
বিশ্বভারতীর তৃণমূল নেতা গগন সরকার-সহ ১০০-র বেশি ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছেন ১ ডজন তৃণমূল নেতা। তাদের বিরুদ্ধে অনধিকার প্রবেশ, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই সরাসরি শাসক দলের প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এরমধ্যে সোমবারই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
সেই কারণেই বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র ও বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংকে নথি চেয়ে চিঠি পাঠালো এনফর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।বিশ্ববিদ্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় কারা যুক্ত ছিল, তদন্তকারীরা কি কি নথি জোগাড় করেছেন, সমস্ত কিছু জানতে চাওয়া হয়েছে ইডির তরফে। তাদের দাবি আচমকা অশান্তিতে এত বড় ঘটনা নাও হতে পারে এর পেছনে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকতেও পারে আর সেখানে থাকতে পারে কোনও তহবিল। সেই কারণেই তলব করা সমস্ত নথি তারপরে এই নিয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
যদিও গোটা ঘটনার দায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের উপর চাপিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। একইসঙ্গে নিজেদের বিধায়ককে ও তারা সমর্থন করেছেন।এই প্রসঙ্গে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ভুবনডাঙার মাঠের সঙ্গে বাঙালির আবেগ জড়িয়ে আছে। উপাচার্য সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে করতে পারতেন। মানুষের আবেগের কথা মাথায় রাখেননি তিনি। তৃনমূলের বিধায়ক এলাকার মানুষ। তিনি মানুষের আবেগকে না গুরুত্ব দিলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন। তাই তিনি ওই জায়গায় গিয়েছিলেন বলে দাবি শোভনের।
যদিও বিশ্বভারতীর বক্তব্য, বিশ্বভারতীর সম্পত্তি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ী ও জমি মাফিয়া। ইতিমধ্যে বেশ কিছু জমি তাদের দখলে চলে গিয়েছে। পৌষ মেলার মাঠেও তাদের নজর রয়েছে। তাই মাঠে মাত্র ৪ ফুট উঁচু পাঁচিল দেওয়ার কাজ চলছিল। এতে সৌন্দর্যের কোনও ব্যাঘাত ঘটবে না। কিন্তু সেই কাজ পরিকল্পনা করে ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের। এই ঘটনায় মঙ্গলবার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিশ্বভারতী। তবে সিবিআই তদন্ত নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও আভাস না পাওয়া গেলেও তদন্তে নামতে চলেছে ইডি।