
যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: বঙ্গ বিজেপির বিজয়া সম্মিলনী ঘিরে ‘জটিলতা’ কাটতে না কাটতেই এবার বিজেপির মহিলা মোর্চার সভাপতি অগ্নিমিত্রা পালের মন্তব্য ঘিরে ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ উগরে দিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক বেশি। বৈশাখীদি একই গুরুত্ব পাবেন না’, অগ্নিমিত্রার এহেন মন্তব্যে তোপ দেগেছেন শোভন বান্ধবী।অগ্নিমিত্রাকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে পরপর ১০টি পয়েন্ট লিখে নিজের রাজনৈতিক বা সাংগঠনিক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ব্যাপারে জানালেন তিনি। সেইসঙ্গে এই মন্তব্যে শোভন চট্টোপাধ্যায়ও যে ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত, সেকথাও জানিয়েছেন বৈশাখী।
অগ্নিমিত্রা পালকে বিঁধে বৈশাখী বলেছেন, ”অগ্নিমিত্রা পাল যখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁর একটাই পরিচয় ছিল, তিনি একজন ফ্যাশান ডিজাইনার। যতদূর আমি জানি, আপনার কোনও রাজনৈতিক পরিচয় ছিল না। কখনও কোনও রাজনৈতিক ভূমিকাও পালন করেননি। তা সত্ত্বেও বিজেপি মহিলা মোর্চার প্রধানের মতো গুরুদায়িত্ব পেয়েছেন”।
পাল্টা উত্তর দেন বৈশাখী,তিনি বলেন, ”উনি বোধহয় অবগত নন। আমি ওয়েবকুপার জেনারেল সেক্রেটারি পদে ছিলাম। অনৈতিক, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। পেজ ৩-তে আমার কখনও নাম আসেনি। পুরুলিয়া থেকে বর্ধমান, গোসাবা থেকে গড়িয়া, ধর্মতলা থেকে যাদবপুর পর্যন্ত ঘুরেছি, ভোটে টিকিট পাওয়ার জন্য় নয়, আমার দলের সদস্যপদ বাড়ানোর জন্য। গার্হস্থ্য হিংসা, শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়ার চেষ্টা করেছি। কিছু ছবি পোস্ট করে জনসমর্থন পাইনি। মিটিং-মিছিলে অংশ নিয়ে মানুষের ভালবাসা অর্জন করেছি”। এতেই থামেননি বৈশাখী। অগ্নিমিত্রার পূর্বসূরী লকেট চট্টোপাধ্য়ায়ের প্রশংসা করে বৈশাখী ফেসবুকে লিখেছেন, ”আপনার পূর্বসূরী লকেট চট্টোপাধ্যায় সুহৃদয়ে আমায় বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানাতেন। যার জন্য় ওঁকে শ্রদ্ধা করি। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও সে দলে আমার অবস্থান স্বীকৃতি দিয়েছেন”।
আরও পড়ুন: কে হিন্দু, কে মুসলিম তা দেখবে না কোর্ট, ‘লাভ জিহাদ’ নিয়ে ঐতিহাসিক রায়দান এলাহাবাদ হাইকোর্টের
অগ্নিমিত্রার উদ্দেশে বৈশাখী এও লিখেছেন, ”আপনার মন্তব্য আমি ব্য়থিত। কোনও বিরোধী দল নয়, আমার দলের সহকর্মীই আমাকে সমালোচিত করলেন…চোখে আঙুল দাদার মতো যদি সারাক্ষণ কেউ এরকম করতে থাকেন, তাহলে বিরক্ত হই”। ফেসবুক পোস্টের শেষাংশে বৈশাখীর সংযোজন, ”আমার কোনও গডফাদার নেই। মুকুল রায়, শোভন চট্টোপাধ্য়ায়, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়, কল্য়াণ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের থেকে রাজনৈতিক মূল্য়বোধ শিখেছি। বিজেপিতে রামলালজি, শিবপ্রকাশজি, মেননজি, অমিতাভদার থেকে অনেক উত্সাহ পেয়েছি…শোভন আমার মেন্টর, আমি ওঁকে শ্রদ্ধা করি…লকেট, রূপা, ভারতী ঘোষদের পছন্দ করি, যাঁরা আমার মতো একজন ক্ষুদ্র নেতাকে অনুপ্রাণিত করতে পারেন”।
তাঁর দীর্ঘ পোস্টের শেষে বৈশাখী এদিন অগ্নিমিত্রাকে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন, ‘সমস্ত শব্দ খুবই মূল্যবান। সেগুলি অবশ্যই সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করা উচিত। আপনার এই দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যে কিন্তু শোভন কোনওভাবেই খুশি হননি। তিনি আপনার কথায় চরম বিরক্ত এবং অসন্তুষ্ট।’