নাইজেরিয়ায় ৪৪ জনের শিরোচ্ছেদ করল বোকো হারাম

নিজস্ব প্রতিনিধি, আবুজা: আবারও সন্ত্রাসী কার্যকালাপে নাম জড়িয়েছে নাইজেরিয়ার। ২৪ ঘন্টা কাটেনি নাইজেরিয়া উপকূলে জলদস্যুদের হাতে ৪ ভারতীয়সহ ১০ জন নাবিককে অপহরণের ঘটনার। এরইমাঝে কৃষি জমিতে কাজ করার সময় ৪৪ জন শ্রমিককে একসঙ্গে বেঁধে গলা কেটে হত্যা করেছে সন্তাসীরা। শনিবার, নৃশংস এই ঘটানাটি ঘটেছে নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত বোর্নো প্রদেশের গারিন কায়াসহেবে গ্রামে। একাধিক সূত্র এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সন্ত্রসী গোষ্ঠী বোকো হারামকে দায়ী করেছে। এদিকে, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদু বুহারি এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ডে পুরো দেশ আহত হয়েছে।
ঘটনা সম্পর্কে জানা যাচ্ছে, কাজের সন্ধানে এক হাজার কিলোমিটার দূরের সোকোতো অঞ্চল থেকে কশোবি এসেছিলেন ৬০ জন ক্ষেতমজুর। শনিবার ক্ষেতে চাষের কাজ করছিলেন তাঁরা। আচমকাই তাদের উপরে চড়াও হয় সশস্ত্র জঙ্গিরা। বেশ কয়েকজন ক্ষেতমজুর পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। ৪৪ জন পালাতে পারেননি। তাঁদের সবাইকে এক জায়গায় জড়ো করে বেঁধে ফেলে নির্মমভাবে গলা কেটে খুন করে জঙ্গিরা। এইপ্রসঙ্গে বোর্নো কৃষক সমিতির প্রাক্তন প্রধান হাসান জাবারমারি জানান, শনিবার বিকেলের দিকে গারিন কায়াসহেবে গ্রামে কাজ করছিলেন স্থানীয় কৃষকরা। হঠাৎ সেখানে হামলা চালিয়ে ৪৪ জন কৃষককে নৃশংসভাবে হত্যা করে বোকো হারাম জঙ্গিরা। এর ফলে বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন। একই অভিযোগ করেছেন জিহাদবিরোধী মিলিশিয়া নেতা বাবাকুরা কোলো। তিনি জানিয়েছেন, নৃশংস হামলার পিছনে বোকো হারাম জঙ্গিরা জড়িত। সূত্রের খবর, এর আগেও একই ঘটনা ঘটেছে বোর্নো প্রদেশে, সেখানে গত মাসে পৃথক দু’টি ঘটনায় ২২ জন কৃষককে নৃশংসভাবে খুন করেছিল বোকো হারামের সদস্যরা।
আরও পড়ুন- গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ আফগানিস্তানে, মৃত্যু কমপক্ষে ২৬ জনের
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরেই উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ায় লাগাতার নাশকতামূলক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বোকো হারাম এবং ইসলামিক স্টেটের (আইএসডব্লিউএপি) জঙ্গিরা। ইতিমধ্যেই তাদের নৃশংস হামলায় কয়েক হাজার নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আর প্রাণ বাঁচাতে ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন কয়েকলক্ষ বাসিন্দা। জানা যাচ্ছে, ২০০৯ সাল থেকে এপর্যন্ত এই অঞ্চলে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অন্তত ২০ লক্ষ অধিবাসী। কেন এই ধরণের ঘটনা? সূত্রের খবর, বোকো হারাম ও আইএসডব্লিওএপি একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ। এই দুই গোষ্ঠী নিজেদের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সাধারণ মানুষকে ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু, তাদের ব্যাপারে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় মিলিশিয়াদের কাছে তথ্য পাচার করছে বা গুপ্তচরকাজে নিয়োজিত রয়েছে এমন সন্দেহে রাখাল, কৃষক ও শ্রমিক জাতীয় লোকজনকে টার্গেট করে তাঁদের হত্যা করে বোকো হারাম।