
যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: ‘আপামর মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী বাঙালির নায়ক ছিলেন সৌমিত্র।’ পরিচালক আদুর গোপালকৃষ্ণন বলেছিলেন এই কথাটি। আর তাই হয়তো কখনও এই জায়গাটি ছেড়ে যেতে চাননি তিনি। একটি মুহূর্তের জন্যেও নয়। তাই তো বলিউডে ছবি করার ডাক পেয়েও সাড়া দেননি তিনি। তার মধ্যে শ্যাম বেনেগলের ছবি ‘কলিযুগ’–এ যুধিষ্ঠির চরিত্রের জন্যে শশী কাপুর সৌমিত্রকে ডেকেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ তিনি যে কাজটি করেননি, তা তো সকলেই জানি। কিন্তু তাতেও তাঁর জনপ্রিয়তা কিছুই কম হয়নি।
বলিউডের নামকরা অভিনেতা, পরিচালক সকলেই যে তাঁর অবদানের ব্যাপারে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল, তার প্রমাণ আজকে স্পষ্ট হল। হবে নাই বা কেন! সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’ ভারতীয় সিনেমাকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছিল। তাই সৌমিত্র চ্যাটার্জি গোটা দেশের কাছেই নক্ষত্রসমান। তাঁর মৃত্যুতে শুধু বাংলা না, বম্বে ও দক্ষিণ ভারতও শোকস্তব্ধ। টুইট করলেন তারকারা।
বলিউডের বিশিষ্ট অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের টুইটঃ
অনিল কাপুর– ‘তিনি একজন কিংবদন্তী। একইসঙ্গে অনুপ্রেরণা।’
সোহা আলি খান– সোহা আলি নিজের মা শর্মিলা ঠাকুর ও সৌমিত্র চ্যাটার্জি অভিনীত ‘অপুর সংসার’–এর একটি ছবি এবং পরবর্তীকালের একটি ছবি পোস্ট করেছেন তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার স্টোরিতে। লিখেছেন, ‘আপনাকে মিস করব।’
মনোজ বাজপেয়ী– ‘মর্মান্তিক ক্ষতি! আপনার আত্মার শান্তি কামনা করি স্যর। আপনি চলচ্চিত্রের জগতকে যা দিয়ে গেলেন, তা চিরকাল প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে উপহার হয়ে থেকে যাবে।’
রিচা চাড্ঢা– ‘সৌমিত্র চ্যাটার্জি, আপনার আত্মার শান্তি কামনা করি। আপনার কাজের মধ্যে দিয়ে আপনি আমাদের কাছে থেকে যাবেন। আপনার ছবিগুলোর জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। বিশ্ব চলচ্চিত্রের জগতের একটা বড় ক্ষতি হয়ে গেল। একটা যুগ শেষ হয়ে গেল আজ। এই শূন্যতা কেউ ভরাট করতে পারবে না।’
সায়নী গুপ্তা– ‘সৌমিত্র চ্যাটার্জি, ফেলুদা, আমাদের স্তব্ধ করে দিয়ে চলে গেলেন। একটি যুগ, একটি প্রজন্ম, বিরাট ঐতিহ্যের অবসান আজ। রুপোলি পর্দাকে ৭০ বছর দিয়ে গিয়েছেন তিনি।’
রনদীপ হুডা– ‘একটি যুগের অবসান হল। কিংবদন্তী অভিনেতার আত্মার শান্তি কামনা করি।’
তিলোত্তমা সোম– ‘বিদায় সৌমিত্রদা। ৬১ বছরের যাত্রা। এই উপহারের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। পরিবারকে জানাই সমবেদনা।’
তিসকা চোপড়া– ‘এই বছরটা আরও এক রত্নকে ছিনিয়ে নিল। সৌমিত্র চ্যাটার্জির আত্মার শান্তি কামনা করি। আপনার পদচিহ্ন আমাদের মননে ও হৃদয়ে চিরকালের জন্য জায়গা করে নিল।’
রাহুল বোস– ‘তাঁর ছবি দেখতে দেখতে বড় হয়েছি আমি। তাই ‘১৫ পার্ক এভিনিউ’ ছবিতে তাঁর সঙ্গে কাজ করাটা আমার কাছে পরাবাস্তবের সমান। আমি তাঁকে কত প্রশ্ন করতাম। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা জানতে চেয়েছিলাম। তিনি সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করি সৌমিত্রদা। শান্তিতে থাকবেন।’
রেসুল পুকুট্টি– ‘দুর্দান্ত ভারতীয় সিনেমার সর্বশেষ স্তম্ভ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। তোশিরো মিউফুনে জাপানি চলচ্চিত্রের কাছে যেরকম, তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রের কাছে তেমনটাই। এই অদৃশ্য জীবানু যে কত প্রাণ নিয়ে নিল, তার ইয়ত্তা নেই। মহান শিল্পীর আত্মাকে শ্রদ্ধা জানাই। প্রণাম।’