ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু প্রেমিকের, অভিযোগের তির প্রেমিকার বিরুদ্ধে

অভিষেক আচার্য, কল্যাণীঃ প্রেমিকার বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হলো প্রেমিকের। ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো প্রেমিকার বিরুদ্ধে। মৃত প্রেমিকের নাম ভবতোষ দেবনাথ (৩৪)। ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই প্রেমিকাকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে, নদীয়ার জাগুলির সুরেন্দ্র নগর এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ভবতোষ দেবনাথের বাড়ি জাগুলির ভৌমিকপাড়ায়। এলাকায় ভালো ছেলে হিসেবেই সুনাম ছিল ভবতোষের। প্রথমে আনন্দপুর এলাকার একটি স্কুলে পার্ট টাইম শিক্ষকতা করতেন তিনি। কম্পিউটার শেখাতেন সেই বিদ্যালয়ে। অপরদিকে সুরেন্দ্র নগরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী নারায়ণ মজুমদারের ছোট মেয়ে দেবযানী মজুমদারকে পড়াতেন ভবতোষ। সেখান থেকেই নারায়ণ দেবনাথের বড়মেয়ে প্রিয়া মজুমদারের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। আরও জানা গিয়েছে, প্রিয়া কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের ছাত্রী। ভবতোষ স্কুলের চাকরি ছেড়ে তুরস্কে চলে যায় ভালো কাজের সুবাদে। সেখান থেকেই মোটা টাকা পাঠাতেন প্রিয়ার ব্যাংকে। কয়েক বছর বাইরে থাকার পর ২০১৯ শের ডিসেম্বরে বাড়ি ফিরে আসে ভবতোষ। চলতি বছরের মার্চে ফের তুরস্কে চলে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু লক ডাউনের কারণে সে আর যেতে পারেনি।
অন্যদিকে, ভবতোষের বৌদি মিঠু দেবনাথের অভিযোগ, রবিবার সকাল থেকেই দেওর ভবতোষ কে বারবার ফোন করতে থাকে প্রিয়া। ফোন আসার পর থেকেই আনমনা হয়ে পড়েন তাঁর দেওর। এরপর সন্ধ্যেবেলা ফের ফোন করে প্রিয়া। তাঁর বাড়িতে ডেকে পাঠায় ভবতোষকে। সেখানেই মেয়েটি তাঁর বাড়ির ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে মেরে ফেলে দেওরকে। একই অভিযোগ করেন মৃতের মা তুলসী দেবনাথ ও বাবা রবীন্দ্র দেবনাথ। তাঁরা বলেন, দুজনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুজনের বাড়িতেই যাতায়াত ছিল দুই পরিবারের। যে টাকা ভবতোষ বিদেশ থেকে মেয়েটিকে পাঠিয়েছিল সেই টাকা ফেরত চেয়েছিল তাঁদের ছেলে। কিন্তু তা ফেরত দিতে অস্বীকার করে অভিযুক্তা। অভিযোগ, অন্য ছেলের সঙ্গেও নাকি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে প্রিয়ার। যদিও অন্যদিকে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন অভিযুক্তা প্রিয়ার মা অম্বিকা মজুমদার। তিনি বলেন, দুজনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এটা ঠিক। কিন্তু ছেলের বাড়ির কোনো অভিযোগই সত্য নয়। তিনি স্বীকার করে বলেন, ভবতোষ রবিবার আমাদের বাড়িতে এসেছিল। তারপর আমার মেয়ে ও ভবতোষ আমাদের বাড়ির ছাদে গিয়েছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি ভবতোষ রক্তাক্ত অবস্থায় নীচে পরে রয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, বাবা নারায়ণ মজুমদার ও মেয়ে প্রিয়া মজুমদারের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। দুজনকেই আটক করেছে হরিনঘাটা থানার পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ভবতোষের পাড়ায়।