মেদিনীপুর শহরে বাথরুম থেকে উদ্ধার বৃদ্ধার অগ্নিদগ্ধ দেহ, চাঞ্চল্য

তারক হরি, পশ্চিম মেদিনীপুর: পশ্চিম মেদিনীপুর শহরের পুলিশ লাইনের নেপালি পাড়া এলাকায় একটি আবাসনের বাথরুম থেকে এক অগ্নিদগ্ধ বৃদ্ধার মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছাড়ালো এলাকায়। বাড়ির সদস্যদের উপস্থিতিতে কিভাবে ওই বৃদ্ধা বাথরুমে গিয়ে গায়ে আগুন দিলেন, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ থেকে এলাকার মানুষ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম বিজলী দে (৭২)। পরিবারে দুই পুত্র, আর পুত্রবধূদের নিয়ে সুখের সংসার। অন্য পুত্র শহরেই অন্যত্র থাকেন। সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ বাড়ির পরিচারিকা প্রথম বৃদ্ধাকে বাথরুমের মধ্যে আগুন জ্বলতে দেখতে পান। এরপরই বাথরুমের দরজায় ছিটকানি ভেঙে দেখতে পান বৃদ্ধা জ্বলছেন। ওই সময় বাড়িতে ছেলেরা কেউ উপস্থিত ছিলনা। ওই বাড়ির বড় পুত্রবধূ করোনা আক্রান্ত হওয়ায় আয়ুস হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। রবিবার তাঁর নেগেটিভ হওয়ার পর তাঁকে আনতে বড় ছেলেও সেখানেই গেছিলেন বলে জানা যায়।
অন্যদিকে বাড়ির ছোট ছেলে পেশাগত কারনে সেই সময় বাড়ির বাইরে ছিলেন। প্রথম পরিচারিকার কাছ থেকে খবর পেয়েই বাড়ির মহিলারা ছোট ছেলেকে ফোন করে বিষয়টি জানান। পরে ছোট ছেলে বাড়িতে এসে এই দৃশ্য দেখার পর পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। মৃত বৃদ্ধার ছোটছেলে অর্ণব কুমার দে বলেন, “এক সপ্তাহ আগে মা পড়ে গিয়ে কাঁধে চোট পেয়েছিলেন। চিকিৎসা চলছিল বাড়িতেই। সোমবার সকালেও সবকিছুই স্বাভাবিক ছিল। সকালে মাকে টিফিন করিয়ে বাইরে গিয়েছিলাম, পরে ফোনে জানতে পারি বাথরুমে গায়ে আগুন লাগানো অবস্থায় মাকে পাওয়া গিয়েছে।”
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে। দেহটি প্রায় ৯০% পুড়ে গিয়েছিল এবং ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছিল বৃদ্ধার। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মানসিক অবসাদ থেকেই হয়ত আত্মঘাতী হয়েছে। তবে পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বৃদ্ধার তিন ছেলেই প্রতিষ্ঠিত। একজন সপরিবারে অন্যত্র থাকেন। ছেলেরা মাকে যথেষ্ট ভালবাসতেন। মা পড়ে গিয়ে আহত হওয়ার পর আলাদা করে তাঁর জন্য পরিসেবিকা রাখা হয়েছিল। বৃদ্ধা স্বামীর পেনশন পেতেন। বাড়িতে কোনওরকম কলহ বিবাদ তারা শোনেননি। তারপরও কেন বৃদ্ধা আত্মঘাতী হলেন, তা অবাক করেছে তাঁদের। পুলিশ মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।