আউটডোর বন্ধ করে করোনার জন্য ফাইট ম্যাপ’ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো ১২৫ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার আউটডোর পরিষেবা বন্ধ করে করোনা হাসপাতাল হিসেবে চিকিৎসা পরিষেবা শুরু করল কলকাতা মেডিক্যাল। আর এই হাসপাতালে এলে যাতে করোনা রোগীকে কোনওভাবেই হেনস্থা হতে না হয়, তার জন্য সুচিন্তিত ও গঠনমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী এই মেডিক্যাল কলেজ।
হাসপাতালে করোনা রোগীরা এলে কোথায়
করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা কোথায় হবে, কি ভাবে চিকিৎসা শুরু হবে, সাধারণ রোগীদের এবং সঙ্কটজনক রোগীদের কোথায় রাখা হবে, সমস্ত কথা বিবেচনা করে একটি ‘ফাইট ম্যাপ’ বানিয়ে ফেলেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই ম্যাপ অনুযায়ী চললে খুব দ্রুত করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যাবে। হাসপাতালে সব বিভাগে এটি টানানো থাকবে। চোখের সামনে থাকলে ডাক্তার বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষরাও বিভ্রান্ত হবেন না।
জানা গিয়েছে, এই ফাইট ম্যাপটিতে তিনটি পর্যায় ঠিক করা হয়েছে। তার জন্য রোগীদেরও তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমত, যাদের করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা হয়নি, দ্বিতীয়ত, যাঁদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এবং সঙ্কটজনক রোগী, তৃতীয়ত, করোনা সংক্রমণ নেই, কিন্তু ‘সারি’ (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটারি সিন্ড্রোম) অর্থাৎ জ্বর-সর্দি-শ্বাসকষ্ট রয়েছে এমন রোগী।
তৃতীয় পর্যায়ের রোগীদের নন-করোনা পজিটিভ চিহ্নিত করার পর অন্য হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাদের করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা হয়নি, এমন রোগীকে প্রথমে গ্রিন বিল্ডিংয়ের দোতলায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। রিপোর্ট পজিটিভ থাকলে তাকে গ্রিন বিল্ডিংয়ের তিনতলায় ভর্তি করা হবে। রিপোর্ট নেগেটিভ এলে গ্রিন বিল্ডিংয়ের চার বা পাঁচ তলায় পর্যবেক্ষণে পাঠানো হবে। রোগী যদি পুরোপুরি সুস্থ হন, তাহলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
হাসপাতালে পরীক্ষা করানোর পরে যদি কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাহলে হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি ব্লকে (এসএসবি) ভর্তি করানো হবে। এসএসবি-তে ওষুধ বা থেরাপির মাধ্যমেই সংক্রমণ সারানোর চেষ্টা হবে। রোগীর অবস্থা যদি গুরুতর হয় তাহলে এসএসবি-সিসিইউতে ভর্তি করানো হবে। আর সংক্রমণ সারিয়ে সুস্থ হয়ে গেলে কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রেখে ছেড়ে দেওয়া হবে। কলকাতা মেডিকেল কলেজের এই রণকৌশলকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অন্যান্য হাসপাতালের চিকিৎসকরাও।