fbpx
কলকাতাপশ্চিমবঙ্গহেডলাইন

কয়লাকাণ্ডে পশ্চিমবঙ্গের ৩০টি জায়গায় অভিযান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক:  বেআইনি কয়লা পাচার কাণ্ডে হই হই করে তল্লাশিতে নেমে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি সিবিআই। সূত্রের খবর, কলকাতা, বর্ধমান, পুরুলিয়া, রাঁচি, পাটনা, ভাগলপুর, বালিয়া সহ ৩০ টি জায়গায় শনিবার সকাল থেকে এক সঙ্গে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

কয়লা কাণ্ডে আয়কর দফতরের তদন্তের পর তা হাতে নিতে চেয়েছিল সিবিআই। সারদা কাণ্ডে তদন্তে যুক্ত সিবিআই আধিকারিকদের এজন্য দিল্লিতে তলব করা হয় বলেও সূত্রের খবর। এদিকে তদন্তে প্রাপ্ত নথির ভিত্তিতে গঠিত ফাইলও আয়কর দফতর থেকে চেয়ে পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। কিছুদিন আগে আয়কর দপ্তর কয়লাকাণ্ডে যুক্ত লালা ও বেশ কিছু ব্যবসায়ীর কলকাতা, আসানসোলের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি পেয়েছিল। নথির ভিত্তিতে তারা জেনেছে রাজ্যের ভিতর গরুপাচারে যুক্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কয়লা ব্যবসায়ীদের যোগ রয়েছে। উভয় পক্ষই রাজ্যের বেশ কিছু প্রভাবশালীদের সঙ্গে সখ্য রেখে নানা বেআইনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বেশ কিছু ব্যাবসায়িক সম্প্রতি নোটিশ পাঠিয়েছে সিবিআই। সামনের বছর রাজ্যে ভোট তার আগে এই পরিস্থিতিতে আগেই ক্ষোভ জানিয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ফের কয়লাকাণ্ড হাতে নিয়ে তদন্ত শুরু করল সিবিআই।

বিরোধীদের অনেকের অভিযোগ, এরা শাসক দলের ছত্রছায়ায় বড় হয়েছে। শনিবার রানিগঞ্জ, আসানসোলের পাশাপাশি কয়লা পাচারে মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালার পুরুলিয়ার বাড়িতেও হানা দিয়েছে সিবিআই। অনেকে বলেন, পুরুলিয়াতে লালার একটি রিসর্টও রয়েছে। এ ছাড়া তল্লাশি চলছে সল্টলেক, শেক্সপিয়ার সরণি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু জায়গায়। শনিবার সিবিআইয়ের তত্‍পরতা নিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়নি। তবে রাজ্য বিজেপি সভাপতি গত কয়েক দিন ধরেই বলছিলেন, মাস খানেকের সব ধরপাকড় শুরু হয়ে যাবে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূলের মুখপাত্ররা বলছিলেন, ভোট এলেই বাংলায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি সক্রিয় হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন: ফের জলদস্যুদের কবলে ৪ ভারতীয় নাবিক, উদ্ধারে তৎপর হল সরকার

কয়লা পাচার কাণ্ডে প্রথমে তদন্ত শুরু করেছিল ইডি। সেই তদন্তে কী কী তথ্য উঠে এসেছে, কী কী নথি প্রমাণ আয়করের হাতে এসেছে, তা বিশদে জানতে চেয়ে সিবিআই চিঠি দেয় ইডিকে। চিঠিতে সিবিআই আয়কর দফতরের কাছে তদন্ত সংক্রান্ত ফাইলও চেয়ে পাঠিয়েছিল। ইডি এর আগে কলকাতায় শেক্সপিয়র সরণী-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় অনুপ মাঝির বাড়ি ও অফিসে হানা দিয়েছিল। সেখান থেকে উদ্ধার হয়েছিল বেশ কিছু কাগজপত্র। তাতেই অনুপ-এনামূল-সতীশের ত্রিপাক্ষিক আঁতাতের হদিস মিলেছিল। এরপর একে একে জানা যায় যে, অনুপ মুর্শিদাবাদ থেকে উত্তরবঙ্গে কয়লা পাচার করার জন্য সাহায্য নিত এনামূল বাহিনীর। এনামূলের ট্রান্সপোর্টেই কয়লা পাচার হত।

আবার দক্ষিনবঙ্গের জেলাগুলি থেকে গরু চুরি করে তা মুর্শিদাবাদ সীমান্তে পৌঁছে দেওয়ার কাজে এনামূলকে সাহায্য করতো অনুপের দল। একই সঙ্গে কলকাতা পুলিসের হাতে গ্রেফতার হওয়া চাটার্ড অ্যাকাউন্ট ফার্ম মালিক গোবিন্দ আগরওয়ালের সঙ্গেও যোগসূত্র মিলেছে এনামূল ও অনুপের। এই চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্টের হয়েই আবার ট্যুইট করে সরব হয়েছিলেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। তিনি কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন গোবিন্দ গ্রেফতার হওয়ায়। কার্যত যা গরু পাচার আর কয়লা পাচারের সমর্থনে ট্যুইট হিসাবেই বিবেচিত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সরাসরি এবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পুলিশি তদন্তের দাবি তুলেছেন।

Related Articles

Back to top button
Close