CBI তদন্তে নয়া মোড়! এনামুল ও লালার কালো টাকা কীভাবে বৈধ করতেন গোবিন্দ?

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নির্দিষ্ট ঘুষের বিনিময়ে বড় গরুকে বাছুর বানিয়ে তা পাচার করে দেওয়ার ছক এবং তার মাধ্যমে কয়লা পাচারের ছক আগেই জানতে পেরেছিলেন গোয়েন্দারা। কিন্তু তার বিনিময় যে বিপুল পরিমাণ কালো টাকা এই পাচারকারীরা হাসিল করত, সেই টাকা কোথায় যেতো তার খোঁজ এতদিন ধরে চালাচ্ছিলেন গোয়েন্দারা। এবার এই ঘটনা সম্প্রতি ধৃত চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট গোবিন্দ আগরওয়ালের যোগ সূত্র খুঁজে পেলেন গোয়েন্দারা। এই ব্যক্তি পাচারের কালো টাকা তার ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে সাদা করতেন, এমনটা জানতে পেরেছে সিবিআই। একইসঙ্গে বিএসএফ কমান্ডান্ট সতীশ কুমার এবং এনামুলকে সামনাসামনি বসে জেরা করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই লেক থানা এলাকা থেকে চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট গোবিন্দ আগরওয়ালকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। যদিও সেই গ্রেফতারের পর রাজ্য সরকারের প্রতি প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজ্যপাল পাহাড়ে বসেই তৈরি করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে বাধা দিতে রাজ্যের এই পরিকল্পনা। সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, এই যোগসূত্রের কথা আগেভাগে জানতে পেরে কলকাতা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে নেয় ওই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টকে। এবার কলকাতা পুলিশের কাছে ওই ব্যবসায়ীকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন আবেদন করবে সিবিআই।
চাটার্ড অ্যাকাউন্ট ফার্ম মালিক গোবিন্দ আগরওয়ালের সঙ্গে গরু পাচারকাণ্ডের কিংপিন এনামুল হক ও কয়লা পাচারচক্রের মাস্টারমাইন্ড অনুপ মাঝি ওরফে লালা যে যোগসুত্র রয়েছে তা বিভিন্ন প্রমাণ পেয়ে আগেই আন্দাজ করেছিলেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ গ্রেফতার করে গোবিন্দ আগরওয়ালকে। এবার সেই কালো টাকার যোগসুত্র জানতে ধৃত বিএসএফ কমান্ডার সতীশ কুমার এবং এনামুল হককে সামনাসামনি বসিয়ে জেরা করার চিন্তাভাবনা করছেন সিবিআই গোয়েন্দারা।
পুলিস সূত্রে খবর, ধৃত আগরওয়ালকে জেরা করে ও তাঁর ফার্মের নথি খতিয়ে দেখে জানা গিয়েছে যে, এনামুল ও অনুপ মাঝির কালো টাকা সাদা করার কাজটি করতেন। পাচারচক্রের দুই মাস্টারমাইন্ডের হিসেব বহির্ভূত সম্পত্তি থেকে শুরু করে কালো টাকার হিসেব সবই এই আগরওয়ালের তত্ত্বাবধানে থাকত। ভুয়ো কোম্পানির নামে অ্যাকাউন্ট খুলে এই কালো টাকা বৈধ করার কাজটি চলত। প্রসঙ্গত এনামুল হককে গ্রেফতার করেছে সিবিআই, তবে কয়লা পাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা এখনও পলাতক।
এদিন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ধৃত এনামুলের ফের করোনা পরীক্ষা করা হয়। সিবিআই সূত্রে খবর, করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকার পর, এনামুলকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। হাজিরা এড়াতে এনামুল দাবি করে সে এখনও সুস্থ নয়। তাই বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হোক। এনামুলের রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তাকে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে তাকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। সিবিআই সূত্রে খবর, বিএসএফ কর্তা সতীশ কুমারের মুখোমুখি এনামুলকে বসিয়ে জেরা করলে উঠে আসতে পারে পাচারের কালোটাকা সংক্রান্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। সেই কারণেই তাদেরকে মুখোমুখি বসে জেরা করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।