কয়লা কাণ্ডে ECL কর্তৃপক্ষকেই নোটিশ CBI’র, গরু পাচার কান্ডের তথ্য জমা দিল BSF

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ক্রমশ গরু পাচার এবং কয়লা পাচার কান্ডের তদন্তে প্রশ্নের মুখে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা। এর আগে আয়কর দফতরের কাছ থেকে নথি তলব করেছিলেন সিবিআই গোয়েন্দারা। গরু পাচার কাণ্ডের সঙ্গে কিভাবে কয়লা পাচার কান্ডের যোগসূত্র রয়েছেে, তা জানতে তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছিল বিএসএফকেও। সোমবার বিএসএফের তরফে এক কনস্টেবল এসে সিবিআইয়ের দাবিমত সমস্ত তথ্য ফাইল দিয়ে যান। একইসঙ্গে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়ে এবার ইসিএল কর্তৃপক্ষকেও নোটিস পাঠিয়েছেন সিবিআই গোয়েন্দারা।
অন্যদিকে কয়লা পাচার কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অন্যতম অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালাকে এদিন নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠানো হলেও তিনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এদিন উপস্থিত হননি। জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে মুম্বইয়ের ওরলিতে রয়েছেন অনুপ মাঝি। ফলে পূর্বাঞ্চলের সিবিআই অফিসের তরফে মুম্বইয়ের সিবিআই ব্রাঞ্চের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রয়োজনে যাতে তিনি সেখানে হাজিরা দেন, তার বন্দোবস্ত করা হবে। কিন্তু তার পরেও তিনি না এলে তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে, এমনটাই সিবিআই সূত্রের খবর।
তবে খাদান থেকে অবৈধ ওয়ে ব্রিজের মাধ্যমে কয়লা পাচারের হদিশ পেয়ে ইসিএল কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা। সাধারণত, খাদান থেকে কয়লা তুলে বিভিন্ন ওয়ে ব্রিজ এর মাধ্যমে তা কারখানায় পৃথক করার জন্য পাঠানো হয়। আর এই ওয়ে ব্রিজ গুলি তৈরি করা হয় সরকারিভাবে জানিয়েই। সিবিআইয়ের অভিযোগ, ইসিএলের আওতাধীন জায়গার মধ্যে অবৈধ বেশ কয়েকটি ওয়ে ব্রিজ তৈরী করা হয়েছিল, যা সরকারিভাবে নথিভুক্ত নয়। এরকম ৯০ টি খাদান এর অবৈধ ওয়ে ব্রিজ এর মাধ্যমে কয়লা পাচারের হদিশ মিলেছে। ওই সমস্ত অবৈধ ওয়েব্রিজের মাধ্যমেই প্রতিদিন কত গাড়ি কয়লা বার হচ্ছে, সেই কয়লার হিসেব রাখা হত। কিন্তু সব ক্ষেত্রে তা কারখানায় পৌঁছত না। আর ইসিএলের আওতাভুক্ত খাদানে এভাবে বেআইনি পাচারের খবর কর্তৃপক্ষের কাছে ছিল না, তা মানতে নারাজ গোয়েন্দারা। এই বেআইনি কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতেই ইসিএল কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দিয়েছেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা।
একই সঙ্গে সীমান্তে গরুপাচার অভিযোগের তদন্তে বিএসএফের কাছে নথি চেয়েছিল সিবিআই। সীমান্তে ২০১৫-২০১৭ পর্যন্ত সময়ের নথি চাওয়া হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। সিবিআই জানতে চায়, ওই সময়ে কারা কারা শীর্ষ আধিকারিকদের দায়িত্বে ছিলেন এবং গরু পাচার হওয়া এলাকাগুলিতে কাদের ডিউটি বেশি পড়ত? সিবিআই-এর দাবিমতো সোমবার দুপুরে একাধিক ফাইল এসে জমা দিয়ে যান বিএসএফের কনস্টেবল। সব মিলিয়ে গরু পাচার এবং কয়লা পাচার কান্ডের তদন্ত যে বেশ জোর গতিতে এগোচ্ছে, সে কথা বলাই যায়।