করোনা মোকাবিলায় N-95 মাস্ক মোটেই নিরাপদ নয়, সতর্ক করল স্বাস্থ্যমন্ত্রক

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা মোকাবিলায় N-95 মাস্ক মোটেই নিরাপদ নয়। করোনা রুখতে মাস্কের ব্যবহার নিয়ে সতর্কবার্তা দিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। মাস্কের ব্যবহার নিয়ে কয়েকটি ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে রাজ্যগুলিকে চিঠি দেওয়া হল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে। কেন্দ্রের নতুন নির্দেশিকায় জারি করেছে। এই্ বিষয়ে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে চিঠি লিখেছে কেন্দ্র। সেই চিঠিতে জানানো হয়েছে যে ভালভ লাগানো N-95 মাস্ক ব্যবহার করা উচিত্ নয়। এতে ভাইরাসের সংক্রমণ আটকায় না বরং এই মাস্কের ব্যবহার ক্ষতিকারক হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় N-95 মাস্ক মোটেই নিরাপদ নয়। বরং বাড়িতে তৈরি কাপড়ের মাস্ক এর চেয়ে অনেক বেশি উপকারি এবং অনেক বেশি নিরাপদ। বিশেষ করে ভালভ যুক্ত N-95 মাস্কে উপকারের থেকে বিপদই বেশি।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে N-95 মাস্কের চাহিদা ছিল চরম। সেসময় অনেক চড়া দামেও এই মাস্ক কিনেছেন বহু মানুষ। তুলনায় এখন বাজারে এই মাস্ক অনায়াসেই পাওয়া যাচ্ছে। দামও আগের তুলনায় অনেক কম। ফলে এখন N-95 মাস্ক ব্যবহারের প্রবণতা অনেক বেড়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক মনে করছে ভালভ যুক্ত N-95 মাস্ক মোটেই করোনা রুখতে কার্যকরী নয়। এর ‘অপব্যহার’ রুখতে সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে একটা চিঠি লেখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ডিরেক্টর জেনারেল অফ হেলথ সার্ভিসেস চিঠিতে রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সতর্ক করে বলছেন, “ভালভ যুক্ত N-95 মাস্কের অপব্যবহার হচ্ছে। এটা ব্যবহারের সাধারণ মানুষের ব্যবহারের অনুপযুক্ত। এতে ক্ষতি বেশি হচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষ যাতে এই মাস্ক ব্যবহার না করেন, সেদিকে নজর দিতে হবে।”
আসলে করোনা রুখতে মাস্ক ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্যই হল, এই ভাইরাসের ড্রপলেট যাতে নাকে-মুখে প্রবেশ না করে না নিশ্চিত করা। কিন্তু কেন্দ্রের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভালভ যুক্ত মাস্ক এই ড্রপলেটগুলি আটকাতে পারছে না। ভালভ থাকায় আক্রান্তের শরীর থেকে করোনা ভাইরাস বাইরে চলে আসছে। যা অন্যদের সংক্রমিত করার ক্ষমতা রাখে। এর তুলনায় বাড়িতে তৈরি কাপড়ের মাস্ক অনেক বেশি উপকারি। DGHS রাজীব গর্গের এই অ্যাডভাইজরিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ওয়েবসাইটে হোমমেড মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে। তা ব্যবহার করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে প্রকাশ্যে সাংবাদিককে গুলি, গ্রেফতার অভিযুক্ত
উল্লেখ্য, বাড়িতে তৈরি মাস্ক বা মুখাবরণী নিয়ে গত এপ্রিলে একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কীভাবে সেই মাস্ক তৈরি করতে হবে, ব্যবহার করতে হবে, সেই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়েছিল। একইসঙ্গে প্রতিদিন মাস্ক পরিষ্কার এবং কেচে নেওয়ার উপর জোর দেওয়া হয়েছিল।
লাগামছাড়া সংক্রমণ গোটা দেশে। দেশের কোণায়-কোণায় বিদ্যুত্ গতিতে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। সোমবার সকাল পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুয়ায়ী দেশে নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১১ লক্ষ ১৮ হাজার ৪৩। দেশে করোনায় মৃত বেড়ে ২৭ হাজার ৪৯৭। এখনও পর্যন্ত দেশে করোনা অ্যাক্টিভ কেস ৩ লক্ষ ৯০ হাজার ৪৫৯টি। ৭ লক্ষেরও বেশি মানুষ করোনামুক্ত হয়েছেন। দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে করোনা। যেভাবে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে রীতিমতো আতঙ্কে বিশেষজ্ঞরাও। তাঁদের অনেকেরই দাবি, ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে কেন্দ্রের তরফে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরুর বিষয়টি নিয়ে কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা মেলেনি।