‘একটা রিপোর্ট দিতে রাজ্যের কত সময় লাগতে পারে’! আমফান ক্ষতিপূরণ বন্টন নিয়ে রাজ্যকে ভৎর্সনা হাইকোর্টের

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: আমফানের ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ বন্টন নিয়ে রাজ্যের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট ও হলফনামা তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে আদালতে এই রিপোর্ট সহ হলফনামা পেশ করতে হবে।
পাশাপাশি, সোমবার এই সংক্রান্ত অনলাইন মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করণ নায়ার রাধাকৃষ্ণণ ও বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে এখন পর্যন্ত কত জন মানুষ আমফানের ক্ষতিপূরণ পেয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ সহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে রাজ্যের ওয়েব সাইটের পাবলিক ডমেনে। এবং আবেদন সত্বেও যারা এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি তাদের তালিকাও প্রকাশ করতে নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
সোমবার মামলার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী নুর ইসলাম শেখ ও শমিক বাগচি আদালতে জানান, এখনো পর্যন্ত প্রায় দশ লক্ষেরও মত মানুষ আমফানের ক্ষতিপূরণ পাননি। এনিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। তাই যেন ক্ষতিপূরণ পাননি তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করুক আদালত।
তারা আরও জানান মামলা দায়ের হওয়ার পর আমফানের ক্ষতিপূরণ চেয়ে পুনরায় আবেদন করার জন্য সরকারের তরফে দুটো তারিখ দেওয়া হয়। মানুষ এতোটাই ক্ষতিগ্রস্থ যে সেই দুই তারিখ করোনা উপেক্ষা করেও মানুষ আবেদন করার জন্য জমায়েত হয়। কিন্তু তা সত্বেও রাজ্য বিকেল চারটে না বাজতেই আবেদন নেওয়া বন্ধ করে দেয়। সাধারন মানুষকে সরানোর জন্য এমনকি পুলিশ দিয়ে অপদস্ত করা হয় বলেও বিচারকদের অভিযোগ।
তবে এদিন রাজ্যের তরফে এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত রিপোর্ট দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে ফের সময় চান।
তার পরিপ্রেক্ষিতে ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘একটা রিপোর্ট দিতে রাজ্যের কত সময় লাগতে পারে ! দিনের পর দিন সময় নিয়ে যাচ্ছেন তার পরেও রিপোর্ট জমা পড়ছে না।’
প্রসঙ্গত, গত ১৬ মে আমফানের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। ব্যাপক ক্ষতি হয় পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক ব্লকেও। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু অভিযোগ, সরকারি সেই ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বহু মানুষ। আমফানের ক্ষতিপূরণের দাবিতে গত দুমাস ধরে বয়ে গিয়েছে অনেক ঝড়। রাজনৈতিক স্তর থেকে প্রশাসনিক স্তরে হয়েছে অনেক অভিযোগ, শাসক ও বিরোধী মধ্যে হয়েছে বাদানুবাদ। তবুও বহু মানুষ এখনও আমফানের ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত। তাই ঝড়ে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ চেয়ে গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টে দুটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। একটি মামলা দায়ের করেন খয়রুল আনম শেখ নামে পেশায় একজন চাষী ও সমাজ কর্মী। ওপর মামলাটি করেন ব্যারাকপুরে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং।