বাংলায় গনতন্ত্রের নামে প্রহসন! একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন স্বপন

রক্তিম দাশ, কলকাতা: বাংলায় গনতন্ত্রের নামে প্রহসন চলছে! যুগশঙ্খকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এমনটাই মন্তব্য করলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা তথা সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। তাঁর মত, ‘পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিবেশ বদলাতে না পারলে একুশে বিজেপি সরকারের পক্ষে শিক্ষা, শিল্প কোনও ক্ষেত্রেই রাজ্যের অগ্রগতি সম্ভব নয়।’
স্বপন দাশগুপ্ত সর্তক করে বলেন, ‘বিজেপি সরকার আসছে একুশে, এটা আমিও মনে করি। তবে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ভাল নয়। আমাদের প্রচার, ভোট লুট সব ঠেকাতে হবে। যাতে মানুষ হিংসামুক্ত পরিবেশে নিজের ভোটটা দিতে পারেন। শেষ ভোটটা পড়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। গত ৫০ বছরে বাংলায় যে হিংসার পরিবেশ তৈরি হয়েছে তা আমাদের সব কিছুকেই আঘাত করছে। এর থেকে বের হতে হবে আমাদের।’
তৃণমূল-বামেদের বহিরাগত তত্বকে উড়িয়ে দিয়ে স্বপনবাবু বলেন, ‘সম্প্রতি হায়দরাবাদে পুরভোট হয়েছে। সেখানেও বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব প্রচারে ছিলেন। আমরা সর্বভারতীয় দল। যেকোনও এধরণের নির্বাচনে সারা দেশের নেতৃত্বকে যুক্ত করি। বাংলায় কিন্তু প্রধান কাজ আমাদের স্থানীয়রাই করছেন। বাইরে নেতারা তাঁদের পরামর্শ, সাহায্য করছেন। তার মানে এই নয় আমরা আউট সোর্স করছি বা বঙ্গ বিজেপির প্রতি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বর আস্থা নেই। আমরা সব রিসোর্সকে এক করে জিততে চাইছি। এটা শুধু তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই নয়। কারণ তাঁরা পুলিশ, প্রশাসনকে আমাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামিয়েছে। এর বিরুদ্ধে লড়তে গেলে আমাদের অলআউটে যেতে হবে।’
রাজ্যপালকে নিয়ে যে বির্তক তৈরি হয়েছে তা অহেতুক বলেই মনে করেন স্বপনবাবু। তাঁর কথায়, ‘এই বির্তকের মানে হচ্ছে তিনি সঠিক কাজ করছেন। আগের রাজ্যপালরা অনেকেই ৫ বছর পেনশন জীবন কাটাতেন। ওনি সেভাবে দেখছেন না। সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে একটু কড়া কথা বলছেন। আর তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। এতে প্রমান হচ্ছে এই রাজ্যপাল আনুষ্ঠনিকতা পালন করছেন না। তিনি কারোর রাবার স্ট্যাম্প নন।’
বঙ্গ বিজেপিতে নতুন পুরানো দ্বন্ধ নিয়ে তিনি বলেন, ‘রাজ্যে যে বিজেপি ছিল তা পুরানো দল হলেও তা ছিল ছোট। বাংলার ইতিহাস দেখলে তা বোঝা যায়। এই দলকে বড় দলে পরিণত করতে হলে আমাদের লোক দরকার। যাঁরা আসছেন তাঁরা ভিন্ন আর্দশের। যাঁরা দলে পুরানো তাঁরা নিষ্টার সঙ্গে বীরত্বের সঙ্গে এতদিন কাজ করছেন। এখন তাঁদের নতুনদের মানিয়ে নিতে হবে। কারণ আমাদের লক্ষ হচ্ছে প্রথম হওয়া। এটা জামানত বাঁচানোর লড়াই নয়, সরকার গড়ার লড়াই। তবে আমি এটাও বলব, যাঁরা আসছেন তাঁরা আমাদের আর্দশ মানিয়ে নিতে পারছেন কিনা তাও যাচাই করতে হবে।’
বিজেপি সাংসদ শান্তুনু ঠাকুর মতুয়া ব্যানারে সিএএ নিয়ে আন্দোলন প্রসঙ্গে স্বপনবাবু বলেন, ‘শান্তনুবাবুর সঙ্গে এনিয়ে অনেকেরই কথা হয়েছে। তাঁকে বুঝিয়েও বলা হয়েছে। মনে হয় তিনি দল বিরোধী কিছু করবেন। কিন্তু সিএএ লাগু না হওয়ায় মতুয়াদের মধ্যে ক্ষোভ হয়েছে। এটাই হয়ত শান্তুনু বলছেন।’
সারদা-নারদা নিয়ে স্বপনবাবু সাফ বলেন, ‘এটা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বিষয় তারা কিভাবে কাজ করবে। তবে আমি মনে করি একটা মামলা যখন শুরু হয় তখন তাকে ধামাচাপা দেওয়া যায় না। প্রথমে সব মামলায় প্রাথমিক তদন্তের জন্য দ্রুত চলে। পরে তার গতি কমে। সবাই জানে এই মামলায় যারা অভিযুক্ত তাদের অনেকই জেলে গিয়েছেন বা এখনও জেলে আছেন। তাই কিছুই হচ্ছে না তা কিন্তু বলা যাবে না।’