কংগ্রেসের ‘পরিবার’ রাজের বিরুদ্ধে জেহাদের সুর দলের একাংশ

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথমে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, তারপর শচীন পাইলট, একের পর এক হেভিওয়েট নেতারা কংগ্রেস দূর্গে ত্যাগ করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের হাই কমান্ড তথা গান্ধী পরিবারের উপর ক্ষুব্ধ হতে শুরু করেছে কংগ্রেসের একাংশ। দলীয় নেতাদের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে ক্ষোভ। ‘ অবশেষে’ কংগ্রেসের ‘পরিবার’ রাজের বিরুদ্ধে জেহাদের সুর শোনা যাচ্ছে। কপিল সিব্বল, শশী থারুর, প্রিয়া দত্ত, কার্তি চিদম্বরমরা প্রকাশ্যেই দলের অন্দরে প্রতিভাবান নেতাদের ‘জায়গা না হওয়া’ নিয়ে সুর চড়িয়েছেন। আবার কিছু বর্ষীয়ান নেতা প্রকাশ্যে না এলেও গান্ধীদের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ নিয়ে আড়ালে থেকে অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন।
কয়েকদিন আগেই কপিল সিব্বলের ট্যুইট তার প্রমাণ। তিনি লিখেছিলেন, ‘নিজের দলের জন্য চিন্তা হচ্ছে। ঘোড়া পালিয়ে যাওয়ার পর কী আমরা জাগব?’প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের ছেলে তথা সাংসদ কার্তি চিদম্বরম বলছিলেন, “গুগল ব্যবসার বাজারে এতটা সফল কেন? কারণ, ওরা নিজেদের মধ্যে থাকা প্রতিভাকে বিচ্ছুরণের সুযোগ দেয়।” কেরলের শশী থারুর এবং মুম্বইয়ের প্রিয়া দত্তরাও একই সঙ্গে সরব হয়েছেন। প্রিয়া বলছিলেন,”আরও একজন বন্ধু আমাদের দল ছাড়ছেন। জ্যোতিরাদিত্য এবং পাইলট দুজনেই আমার খুব ভাল বন্ধু। আমাদের দল দু’জন প্রতিভাবান ও শক্তিশালী নেতাকে হারাল। আমার মনে হয় না, উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়াটা দোষের কিছু।” শশী থারুরও পাইলটের প্রতি দলের এই আচরণে ‘দুঃখিত।
শচিন পাইলটের ক্ষেত্রে ঘটনাটা সিন্ধিয়ার মত ঘটেনি। সিন্ধিয়া যখন দল ছাড়েন, তখন গান্ধী পরিবারের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি। রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, সিন্ধিয়ার জন্য দরজা সবসময় খোলা ছিল, কেন তিনি আগে এলেন না। পাইলটের ঘটনাটা অন্যরকম। তিনি নিজে ফোন করেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে। রয়দীপ সুরযেওয়ালা জানিয়েছেন তাঁর সঙ্গে সোনিয়া গান্ধীরও কথা হয়েছে। দলে থাকতে আর্জি জানিয়েছেন তিনি। গান্ধী পরিবারের সঙ্গে সচিন পাইলটের ঘনিষ্ঠতার কথাও উল্লেখ করেছেন সুরযেওয়ালা।
আরও পড়ুন: মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত পাঞ্জাবের গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী তৃপ্ত রাজিন্দর সিং বাজওয়া
মধ্যপ্রদেশের জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, ত্রিপুরার বিক্রম মাণিক্য দেববর্মা, উত্তরপ্রদেশের অদিতি সিং, হরিয়ানার অশোক তানওয়ার, ঝাড়খণ্ডের অজয় কুমাররের মতো কংগ্রেসের প্রতিভাবান তরুণ নেতানেত্রীরা প্রবীণদের সঙ্গে লড়াই করতে না পেরে একে একে দল ছেড়েছেন। সেই একই পথে পা বাড়িয়ে রাজস্থানের শচীন পাইলট। একের পর এক প্রতিভা দল ছাড়ায় অবশেষে বোধোদয় হয়েছে কংগ্রেস নেতাদের একাংশের। গান্ধী পরিবারের ‘সিদ্ধান্তহীনতা’ এবং ‘একনায়কতন্ত্রের’ বিরুদ্ধে এবার অস্ফুটে হলেও মুখ খুলছেন তাঁরা।
কিন্তু সূত্রের খবর, ক্ষোভ জমেছে দীর্ঘদিন ধরেই। কংগ্রেসের অনেকেই মনে করছেন, পাইলটের মুখ্যমন্ত্রী পদ পাওয়া উচিত্। এতদিন ধরে গেহলট মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার খাতিরে অনেক সুবিধে পেয়েছেন বলে অভিযোগ। গান্ধী পরিবারের সঙ্গে বৈঠক করার ক্ষমতা কেবল তাঁরই ছিল। দিন দশেক আগে যখন পাইলট দিল্লি এসেছিলেন নিজের অভিযোগের কথা জানাতে, তখন গান্ধী পরিবারের কেউ দেখা করেনি, বৈঠক হয়েছিল আহমেদ পটেলের মত নেতাদের সঙ্গে।