শিকেয় সচেতনতা…রাস্তায় মুড়ি-ঘুঘনি বিক্রি করলেন করোনা পজিটিভ ব্যক্তি! চাঞ্চল্য

মিল্টন পাল, মালদা: ব্যস্ততম শহরের রাস্তায় করোনা পজিটিভ ব্যক্তি বিক্রি করলেন ঘুঘনি মুড়ি, চপ। তার হাতে মাখানো ঘুগনি-মুড়ি চপ খেলেন অনেকেই। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানালেন ওই ঘুগনি-মুড়ি বিক্রেতা করোনা পজেটিভ। এরপরই সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের চক্ষু চড়ুকগাছ। ঘটনার পর বন্ধ করে দেওয়া হল দোকান। মুড়িঘুগনি বিক্রেতাকে স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে কোভিড-১৯ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ফুটপাতের ওই দোকানটি।
আরও পড়ুন:যোগী রাজ্যে বাড়ল নাইট কারফিউ’র সময়সীমা
শুক্রবার রাতের স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ফের মালদায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭ জন। যাদের মধ্যে মালদা শহরের রয়েছেন ১০ জন রয়েছে। পাশাপাশি করোনাই মহিলাদের আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত মালদায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে গেল।
পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদা শহরের বালুচর এলাকায় করোনায় ফের নতুন করে চারজন সংক্রমিত হয়েছে। যাদের মধ্যে ওই মুড়িঘুগনি বিক্রেতা যুবক রয়েছে। কিছুদিন আগেই ভিন রাজ্য থেকে ফিরেছে ওই যুবক। এরপর মালদা মেডিক্যাল কলেজে ওই যুবকের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে করোন পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু তারপর ওই যুবক হোম কোয়ারেন্টিনে না থেকেই ফোয়ারা মোরে রীতিমতো ঘুগনি মুড়ি ব্যবসা খুলে বসে।
আরও পড়ুন:আগামী ২৯ জুন থেকে খুলছে কর্তারপুর করিডর
মালদা শহরের ফোয়ারা মোড়ের ট্রাফিক সিগন্যালের পাশেই চপ ,মুড়ি , ঘুগনি পসরা সাজিয়ে বসে। শুক্রবার রাতে ওই দোকানে ব্যাপক চপ, মুড়ি, ঘুগনি বিক্রি হয়। শনিবার সকাল থেকে পুনরায় দোকান খুলেই বেচাকেনা করে ওই যুবক। তারপরই হঠাৎ ইংরেজবাজার থানার পুলিশ এবং স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা ফোয়ারা মোরে ওই যুবকের দোকানে অভিযান চালায়। ওই চপ বিক্রেতা যে করোনাই আক্রান্ত, সে কথা সরাসরি বলে দেওয়ার পরে আশেপাশের লোকজনের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে । এরই মধ্যে অনেক মানুষ ওই যুবকের হাতের মাখানো মুড়ি ,ঘুগনি , চপ খেয়েছেন। যাতে নতুন করে শহরে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য দফতরের একাংশ কর্তারা।
মালদায় নতুন করে ৪৭ জন করোনাই আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত মালদা জেলায় করোণা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪৪ জন। এদিনের রিপোর্টে মালদা শহরে বালুচর এলাকার একই পরিবারের তিনজন সদস্য রয়েছে। পাশাপাশি ওই মুড়ি ঘুগনি বিক্রেতার বাড়ি শহরের বালুচর এলাকায়। যদিও এখনও পর্যন্ত বালুচরের বেশিরভাগ এলাকাকে কন্টাইমেনট জোন হিসাবে উল্লেখ করেনি প্রশাসন। যা নিয়ে শহরের অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই অসন্তোষ ছড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন করে ৪৭ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে ইংরেজবাজার ব্লকের বেশিরভাগ রোগি রয়েছে। এছাড়াও পুরাতন মালদা, চাঁচোল, গাজোল, কালিয়াচক ব্লকেরও বেশকিছু মানুষ করোনাই আক্রান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন:মালদায় আম ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুন, হাঁসুয়ার কোপে আহত এক
জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরাতন মালদার নারায়ণপুর এলাকার কোভিড হাসপাতাল ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি এলাকার সরকারি-বেসরকারি ভবনগুলি নেওয়া হয়েছে। সেখানেও এই সংক্রমণে আক্রান্ত রোগিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে মাক্সবিহীন মানুষকে রাস্তায় দেখলেই ব্যাপক ধড়পাকড় শুরু করেছে মালদা পুলিশ। শনিবারও মালদা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে কমপক্ষে কুড়ি জনকে মাক্সবিহীন অবস্থায় থাকতে দেখে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানান, করোনা সচেতনতায় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতেই এই ধরনের অভিযান চালানো শুরু করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করে সর্তক করা হচ্ছে।