ভ্যাকসিন সংরক্ষণের প্রস্তুতি শুরু করুন, রাজ্যগুলিকে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দিলেন মোদি

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: উত্সবের মরশুম শেষ হতেই বহু জায়গায় নতুন করে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছে। করোনা ভ্যাকসিন কীভাবে দেওয়া হবে, তা নিয়ে শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রীদের কাছ থেকে লিখিত পরিকল্পনা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী । করোনা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে অসুখ লুকনোকেই দায়ী করলেন তিনি। তিনি বললেন যে টিকা নির্মাণের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে কিন্তু কবে টিকা পাওয়া যাবে সেটা নির্ভর করে হু সহ অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার ছাড়পত্র দেওয়ার ওপর। তবে টিকা যে স্বচ্ছ ও মসৃন ভাবে দেওয়া হবে ও টিকার সুরক্ষা নিয়ে কোনও আপোস করা হবে না, সেটি স্পষ্ট করে দেন মোদি।
ভ্যাকসিন কবে আসবে, বিষয়ে তাঁর মন্তব্য, “ভ্যাকসিন কবে আসবে তা বিজ্ঞানীরা ঠিক করবেন। কত ভ্যাকসিন নিতে হবে, কোন ডোজ কার্যকর হবে তাই নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। এই নিয়ে ধাপে ধাপে এগোতে হবে। আমরা ভারতীয় উত্পাদক, আন্তর্জাতিক নিয়ামক সংস্থা, আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছি।”তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ভ্যাকসিন এলেই হল না, দেখতে হবে সবাই যেন এই ভ্যাকসিন পায়। তাঁর মত, এত বড় টিকাকরণ অভিযান দীর্ঘ সময় চলবে। ফলে বিবাদ ভুলে দলগত ভাবে একসঙ্গে কাজ না করলে টিকাকরণ অভিযানে সাফল্য আসবে না। তবে তাঁর আশ্বাস, ভারত যে ভ্যাকসিন দেবে, তা সমস্ত বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষার পরই সিদ্ধান্ত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে এখনও পর্যন্ত এটা নিশ্চিত নয় যে একটা ডোজ লাগবে, না দুটো লাগবে। একই সঙ্গে ভারতে তৈরি হওয়া টিকা সহ যেখানে যা টিকা তৈরি হচ্ছে, তার ওপর সরকার কড়া নজর রাখছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু যতক্ষণ না নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ছাড়পত্র না আসে, টিকা সংক্রান্ত টাইমলাইন যে দেওয়া সম্ভব নয়, সেটা সাফ করে দেন প্রধানমন্ত্রী। এই বিষয় যে সরকার বিজ্ঞানীদের কথা অনুযায়ী চলবে, সেটাও সাফ করে দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী এদিনের বৈঠকে এই রাজ্যগুলিকে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পজিটিভিটি রেট ও মৃত্যুহার আরও কমাতে হবে।
আরও পড়ুন : ২০২৩ সালে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ ভারত
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘শীঘ্রই আপনারা আমাকে লিখিত পরিকল্পনা পাঠান। তারপর সেই পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই সারা দেশে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। পাশাপাশি, কীভাবে এই ভ্যাকসিন ব্লক স্তর পর্যন্ত যাবে, সেই নিয়েই পরিকল্পনা করুন।’তবে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, কী ভ্যাকসিন দেশের মানুষকে দেওয়া হবে। তার দাম কত হবে তা নিয়ে কিছুই স্থির হয়নি। রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলেই তা স্থির করতে হবে। তবে যে ভ্যাকসিনই দেওয়া হোক না কেন, তা বিশ্বের সেরা ভ্যাকসিনই হবে, আশ্বস্ত করেছেন মোদি।
পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী রাজ্যগুলিকে এই ভ্যাকসিনের পরিকাঠামো তৈরিতে জোর দেওয়ার কথা বলেন। কোল্ড স্টোরেজ তৈরি, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ, ব্লকস্তর পর্যন্ত পরিকাঠামোআ তৈরি সবই রাজ্যগুলিকে এখনই করে নেওয়ার কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী জানান, পরের বছর প্রথমেই ভ্যাকসিন চলে এলে, তা সমস্যাহীন ও মসৃণভাবে কী করে প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, তার পরিকল্পনা করার জন্য রাজ্যগুলির কাছে আর্জি জানান এদিন। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে বণ্টনের ব্যবস্থা রূপায়ণে রাজ্যগুলি বড় ভূমিকা পালন করবে। সেই কারণে রাজ্যে রাজ্যে এই সংক্রান্ত কমিটি গঠন করার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।