মালদায় যুব নেতার হুমকিতে শহর ছাড়া দম্পতি

মিল্টন পাল, মালদা: শহর যুব তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে দম্পতি কাছ থেকে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা দাবি করা ও স্ত্রীকে কুপ্রস্তাবের অভিযোগ। তা দিতে অস্বীকার করায় তাদের শহর ছাড়া ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ। মালদার ইংরেজবাজার থানা এলাকার ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার পর জেলা ছাড়া হয়ে রয়েছে ওই দম্পতি। পাল্টা ওই যুব তৃণমূল নেতার দাবি ওই দম্পতি প্রতারক। তার কাছ থেকে দু’ লাখ ৪৫ হাজার টাকা প্রতারণা করেছেন। সেই পাওনা টাকা চাওয়ায় তাকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েও লাভ না হওয়ায় আতঙ্কে দম্পতি আশ্রয় নিয়েছে অন্য শহরে।পাল্টা ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে যুব তৃণমূল নেতা।
আরও পড়ুন: উত্তপ্ত উপত্যকা…সেনা–জঙ্গি গুলির লড়াইয়ে নিকেশ হিজবুল কমান্ডার সহ ২
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত তৃণমূল যুব নেতার নাম শুভ্রদীপ দাস ওরফে বাপি দাস।এক সময়ের জেলা যুব সভাপতি বর্তমানে তৃণমূলের জেলা কোঅর্ডিনেটর অম্লান ভাদুড়ির ঘনিষ্ট। চন্দন রায় নামে ওই যুবক অভিযোগ করেন চাকুরি সূত্রে ও বিবাহ সূত্রে কয়েক বছর আগে তিনি মালদায় আসেন। শহরের ফুলবাড়ি এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নেন। সেখানেই স্ত্রীকে নিয়ে থাকতে শুরু করেন। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। স্ত্রীর ইচ্ছে অনুযায়ী এলাকার এক যুবকের সঙ্গে পার্টনারশিপে রেস্তোরাঁয় ব্যবসা শুরু করেন। কিছুদিন ওই ব্যবসার ঠিকঠাক চলছিল। এরপর ব্যবসা সংক্রান্ত বিবাদের জেরে তাদের পার্টনারশিপ ভেঙে যায়। আর এরপরই সমস্যা মেটাতে ময়দানে এগিয়ে আসে এলাকার যুব তৃণমূল নেতা শুভ্রদীপ দাস ওরফে বাপি দাস।
অভিযোগ বাপি দাস তাদের কাছ থেকে সমস্যা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য প্রচুর টাকা নেয়।এরপর আরও দু লক্ষ টাকা দাবি করে। সেই টাকা দিতে অস্বীকার করায় চন্দন রায়ের বুলেট মোটরবাইক কেড়ে নেয়। তার দোকানের সামগ্রী যা ছিল তাও বাজেয়াপ্ত করে নেয়। সমস্যা মেটানোর নাম করে শহরের একটি বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে গিয়ে তার স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়।তাতে রাজি না হওয়ায় ওই দম্পতিকে প্রাণে মারার হুমকি দেয়। সমস্ত কিছুর জোরপূর্বক লিখিয়ে নেয়। এরপর থেকেই আতঙ্কে মালদা ছাড়া হয়ে গিয়েছেন ওই দম্পতি। বারবার ইংরেজবাজার থানার দ্বারস্থ হয়েও কোনও লাভ হয়নি।
আরও পড়ুন:নেপালের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে আক্রমণে ওলির সরকার
যদিও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা বাপি দাস সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, চন্দন রায় একজন প্রতারক। নিজেকে সরকারি ইডির কর্মী পরিচয় দিয়ে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার নাম করে তার কাছ থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা আদায় করে। পরে তিনি তা জানতে পেরে তার কাছ থেকে টাকা দাবি করলে তার নামে এখন মিথ্যে অভিযোগ আনছে। সেও পাল্টা ইংরেজবাজার থানা ওই দম্পতির নামে অভিযোগ করেছেন।
বিজেপির মালদা জেলার সহ-সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,কারোর কোন ব্যবসা সংক্রান্ত বিবাদ থাকলে আইন-আদালত রয়েছে। সারা পশ্চিম বাংলায় জুড়ে তৃণমূলের যা কালচার ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত মানুষের কাছ থেকেও হোটেল জায়গা জমি দখল করা রাহাজানি করে তার নামে সম্পত্তি লিখে নেওয়া। আর তা দিতে অস্বীকার করলেই মহিলাদের নামে বাজে বাজে কথা বলা কু প্রস্তাব দেওয়া। আর এর সঙ্গে সম্পূর্ণ প্রশাসন যুক্ত থাকে।আর প্রশাসনের মাথার উপর হাত থাকে বলে রাজ্যজুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস দুষ্কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। বিজেপি যখন ক্ষমতায় আসবে এই ধরনের দুষ্কৃতীকারীদের শ্রীঘরে পাঠিয়ে দেবে।
আরও পড়ুন:করোনা আবহে বাড়ল পেট্রোল-ডিজেলের দাম, মাথায় হাত মধ্যবিত্তদের
তৃণমূলের মালদা জেলার সাধারণ সম্পাদক শুভময় বসু বলেন, দলীয় মহলে এটা আমরা তদন্ত করতে বলেছি। অভিযোগ যেমন হয়েছে পাল্টা অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ যেমন তদন্ত করবে দলও তেমনি তদন্ত করবে। দল কখনোই তাদের পাশে দাঁড়াবে না। তদন্তে যা উঠে আসবে সেই মতো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যদিও গোটা ঘটনা নিয়ে জেলার পুলিশ সুপার অলক রাজোরিয়া কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।