রেল দফতরের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ, বাড়ি সিল করা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসা আক্রান্তের,

মিল্টন পাল,মালদাঃ রেল দফতরের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ করোনা আক্রান্ত রেল কর্মীর। পরে বাড়ি সিল করতে এলে পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে চরম বচসা। ঘটেছে রবিবার মালদা শহরের রেল কলোনি এলাকায়।অবশেষে করোনা পজিটিভ ওই মহিলা রেলকর্মীর মানসিকতা দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হয় ইংরেজবাজার পুরসভা কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ কর্তাদের। আক্রান্ত ওই মহিলা রেল কর্মী সরাসরি পূর্ব রেলের মালদা ডিভিশনের বিরুদ্ধে চরম উদাসীনতা ও গাফিলতির অভিযোগ তুলে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন পুলিশ ও পুরসভা কর্তাদের সামনে। ওই মহিলা রেলকর্মী মালদা ডিআরএম অফিস রেলের আধিকারিক পদে কর্মরত। রেল কলোনি এলাকার একটি কোয়ার্টারে একাই থাকে তিনি।
মহিলা রেলকর্মী বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলাম । রেল কর্তৃপক্ষ আমাকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারান্টিনে থাকতে বলেছিলো। সেই নির্দেশ মেনে আমি একা কোয়ার্টারে ছিলাম। এরপর মালদা ডিআরএম অফিসে বারবার ফোন করে আমার শারীরিক সমস্যা হচ্ছে বলে জানায়। কিন্তু একবারের জন্য রেল প্রশাসন আমার পাশে দাঁড়ায়নি । পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মারফত শনিবার আমার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা । এরপরই রবিবার আমি কারোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর জানতে পারি।
ওই মহিলার অভিযোগ, এতদিন কষ্টে থাকলাম। একা কোয়ার্টারে থাকি। একবারের জন্য কেউ আমার পাশে দাঁড়ালো না। আর যেই করোনা পজেটিভের লিস্টে আমার নাম উঠে এলো, সঙ্গে সঙ্গে আমার বাড়িতে কোভিড-১৯-এর স্টিকার সাটতে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা চলে এল। করোনা চিহ্নিতকরণের স্টিকার এবং লাল ফিতে দিয়ে কোয়াটারটি ঘিরে দেওয়ার চেষ্টা করা হল। আমি এটা কিছুতেই করতে দিব না । করোনা স্টিকার কোয়ার্টারের সামনে আটকানো থাকলে কোন সাহায্য পাবো না। না খেতে পেয়ে মরতে হবে আমাকে । তাই পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের আমি সেই কাজ করতে দিই নি।
এদিকে সরকারি বিধি না মানার অভিযোগ উঠে ওই মহিলা রেলকর্মীর বিরুদ্ধে। রেলের ওই কোয়াটারটি কনটেইনমেন্ট জোন হিসাবে ঘিরতে গিয়ে রীতিমতো নাজেহাল হতে হয় পুলিশ, প্রশাসন কর্তাদের। রবিবার স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী , ফের মালদায় নতুন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭ জন। যার মধ্যে রেল কলোনি এলাকায় ১০ জনেরও বেশি আক্রান্ত রয়েছেন।
ইংরেজবাজার পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর নরেন্দ্রনাথ তেওয়ারি বলেন, রেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ওই মহিলা রেলকর্মীর নানান অভিযোগ করেছেন। যার কারণে আক্রান্ত ওই মহিলা রেলকর্মী তাঁর কোয়ার্টারকে কোভিড-১৯ পজিটিভ বলে চিহ্নিত করণ করতে দেবেন না। তাঁর কোয়ার্টারটি সিল করতেও চরম বিরোধিতা করেছেন। অনেক বোঝানোর পর কোন কাজ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের ফিরে আসতে হয়েছে। তবে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার জন্য প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।
করোনায় আক্রান্ত মালদা ডিআরএম অফিসের ওই মহিলা কর্মীকে এলাকার বাসিন্দারা অনেক বোঝান, কিন্তু তাতে কোন লাভ হয় নি। সেখানে পুলিশ কর্মীরা ওই মহিলা রেলকর্মীর কোয়ার্টারে করোনা চিহ্নিতকরণ স্টিকার ও ফিতে লাগাতে গেলে তেড়ে আসেন বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে পুলিশ কর্মীরা ফিরে যান। একই আচরণ করেন পুরকর্মীদের সঙ্গেও।
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে,সাধারণ মানুষদের স্বার্থের কথা ভেবে, প্রশাসনিক স্তরে খতিয়ে দেখে আইনগত ভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।