অ্যামোনিয়ামে দ্বগ্ধ ‘দারাউসের ঝুলন্ত উদ্যান’, লেবাননে পোড়া ছাইয়ের গর্ভেই বাড়ছে করোনা
বেহরুট,(সংবাদ সংস্থা): বেহরুট বন্দরে রাসায়নিক থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর করোনাভাইরাস সংক্রমণেরও বিস্ফোরণ ঘটার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে লেবাননে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মুখপাত্র তারিক জারাসেভিক এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “লেবাননে এত মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ায় তাদের মধ্যে দ্রুত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।”
লেবানিজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, সারাদেশে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ১২১ জন, মারা গেছেন ৮৭ জন। বন্দরে বিস্ফোরণের আগে থেকেই করোনা সংক্রমণ ধীরে ধীরে বাড়ছিল লেবাননে। তবে দুর্ঘটনায় চিকিৎসা ব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো একদিনে তিন শতাধিক নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, মারা গেছেন অন্তত সাতজন। করোনা সংক্রমণের এই আশঙ্কা থেকেই গত ৭ আগস্ট লেবাননের জরুরি স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনে ১৫ মিলিয়ন ডলার তহবিলের আবেদন জানিয়েছে ‘হু। যাতে, লেবাননের স্বাস্থ্যখাতে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম ঘাটতির মতো মারাত্মক যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার মোকাবিলা করা যায়।
গত ১০ আগস্ট রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবিক বিষয়াদি সমন্বয়কারী অফিস বলেছে, “বেরুটে জরুরি অবস্থার কারণে করোনাভাইরাস বিষয়ক অনেক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা শিথিল করা হয়েছে। এতে আগামী সপ্তাহগুলোতে সেখানে সংক্রমণের হার আরও বেড়ে যেতে পারে।” রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, বিস্ফোরণে বেরুটের প্রধান তিনটি হাসপাতালসহ অন্তত ১৫টি মেডিক্যাল স্থাপনা গুরুতর বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরটির ৫৫টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ৪৭ শতাংশ পুরোদমে সেবা কার্যক্রম চালাতে পারছে।”
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট বেরুট বন্দরের বিস্ফোরণে দেড় শতাধিক মানুষ নিহত হয়। আহত হয় ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ। ওই ঘটনায় লেবাননে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে টিয়ারগ্যাস ব্যবহার ও লাঠিপেটা করে। বিক্ষোভকারীরা গতরবিবার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে অবরোধ সৃষ্টি করলে পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয়। এর আগে গত শনিবার বিক্ষোভকারীরা বিদেশ মন্ত্রণালয়ে হামলা চালায়। একইসঙ্গে বিক্ষোভকারীরা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, ব্যাংক ও ঘরবাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে হতাহতের ওই ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার জের ধরে এর আগে লেবাননের আইনমন্ত্রী মারিয়া ক্লাউদে নাজিম, তথ্যমন্ত্রী মানাল আব্দেল সামাদ ও পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রী ড্যামিয়ানোস কাত্তার নিজ নিজ পদ থেকে সরে দাঁড়ান। পদত্যাগ করেছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব। যার জেরে ভেঙে গেছে লেবাননের জাতীয় সরকার।